ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

খুলনায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ : বাড়ছে দুর্ভোগ, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

প্রকাশনার সময়: ২০ মার্চ ২০২৩, ১৭:১১

খুলনা মহানগরীতে দিন দিন জনসংখ্যা বাড়লেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে যত্রতত্র গড়ে উঠছে ভবন। সেসঙ্গে অপ্রশস্ত সড়কে যানজটও বাড়ছে। আর নগর অভ্যন্তর ও শহরতলীর বেশিরভাগ খাল দখল হয়ে যাওয়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। এছাড়া ময়লার ডাম্পিং স্টেশনগুলো শহরের মধ্যে হওয়ায় বাড়ছে পরিবেশ দূষণ।

অপরদিকে, কেডিএ, কেসিসি, ওয়াসা ও বিদ্যুৎ বিভাগসহ সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমন্বয়হীনতায় নগরজুড়ে সারা বছরই লেগে থাকছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে অর্থের যেমন অপচয় হচ্ছে, তেমনি ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর।

ভূগলের ভাষায়- কোনো একটি স্থানে নগর সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে নগরায়ণ (আরবানাইজেশন) বলা হয়। গ্রাম কিংবা অনুন্নত মফস্বল শহর থেকে মানুষ যখন জীবন ও জীবিকার তাগিদে শহরে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে নগরায়ণ বলা হয়। এছাড়া বর্তমানে উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানের আশায় মানুষ শহরে গিয়ে বসবাস শুরু করে। এর ফলে শহরের জনবসতি, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সহজ কথায়, বিপুলসংখ্যক মানুষের গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তর, শহরের জনবসতি ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি নগরায়ণ নামে পরিচিত।

ঠিক একইভাবে অপরিকল্পিত নগরায়ণের (আন-প্লান্ড আরবানাইজেশন) ফলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যেমন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে পরিবেশের ওপর। নদী ভাঙন এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘড়বাড়ি হারিয়ে খুলনা অঞ্চলের কয়রা-পাইকগাছা ও দাকোপসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ খুলনা শহরমুখী হচ্ছে। একারণে অতিরিক্ত লোকের বাসস্থানের ঘাটতি মেটাতে যথেচ্ছা দালানকোঠা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে কর্মসংস্থান কমে খাদ্যের অভাব, পরিবহন ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। মানহীন পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বর্জ্যের তীব্র দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত ধোঁয়া পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠস্থ পানিকে দূষিত করছে। এছাড়া কল-কারখানা ও যানবাহনের কালো ধোঁয়া থেকে নির্গত সীসা, পারদ, নিকেল, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতির কারণে হাঁপানি, সর্দি, কাশি, ক্যান্সার, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য এলার্জি জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে শহরবাসীর জন্য শিক্ষা-চিকিৎসার সুবিধা ও বিনোদন ব্যবস্থাও কমে যাচ্ছে।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)-এর সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পিত নগরায়ণের মূলমন্ত্রকে ধারণ করে ১৯৬১ সনের ২১ জানুয়ারি ‘খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এরপর ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রণীত হয় ‘খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮’। বর্তমানে খুলনা বিভাগের ৩টি জেলার ১২টি উপজেলায় প্রায় ৮২৪ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা কেডিএ-এর মহাপরিকল্পনার অধিক্ষেত্র। যার উত্তরে নওয়াপাড়া, দক্ষিণে মংলা পোর্ট পৌরসভা, পূর্বে অভয়নগর, দিঘলিয়া, রূপসা ও পশ্চিমে ডুমুরিয়া উপজেলার কৈয়াবাজার পর্যন্ত। কেডিএ ৩৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করে ১০টি আবাসিক এলাকায় প্রায় ৪ হাজার প্লট জনসাধারণের মধ্যে বরাদ্দ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা ১ম, ২য় ও ৩য় অংশ, নিরালা, মুজগুন্নি, দৌলতপুর, শিরোমনি, মিররেরডাঙ্গা, নিবিড় ও ময়ূরী আবাসিক এলাকা।

এদিকে, কেডিএ অধিভূক্ত এলাকায় স্থাপনা নির্মাণে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা এবং ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে সড়কের অপ্রশস্ততা, সড়ক ঘেষে ভবন নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপ্রতুল, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং অনুমোদন বহির্ভূত নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। যদিও কেডিএ কর্তৃপক্ষ এ ধরণের বিধি বহির্ভূত নির্মাণ চিহ্নিত করে তা অপসারণে জোর দিয়েছে বলে জানা গেছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আবাসিক এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে গড়ে ওঠা খেলাপি নির্মাণ উচ্ছেদ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) শবনম সাবা বলেন, আগের তুলনায় শহরে লোক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে ভবনের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনেক স্থাপনা নির্মাণ হলেও বর্তমানে যথাযথ নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি এবং প্লান অনুমোদনের ক্ষেত্রে তদারকি করা হচ্ছে। সর্বপরি খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার মূলমন্ত্র অর্থাৎ মহাপরিকল্পনা প্রনয়ণের মাধ্যমে ভূমির পরিকল্পিত ব্যবহার, নগরায়ণ ও অপরিকল্পিত স্থাপনা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিকল্পিত নগরায়ণ ও আধুনিক খুলনা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে। সকলে নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করলে এবং আইন মেনে চললে অদূর ভবিষ্যতে খুলনাকে একটি পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

খুলনা সিটি কর্পোরশেন সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা পৌরসভা, ১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং ১৯৯০ সালের ৬ আগস্ট সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। বর্তমানে এ শহরের আয়তন ৪৫ দশমিক ৬৫ বর্গ কিলোমিটার (১৭৬২ বর্গমাইল)। এই নগরের বয়স প্রায় ৪০ বছর হতে চললেও বাড়েনি পরিধি, কিন্তু বহুগুণে বেড়েছে জনসংখ্যা ও স্থাপনা। যদিও নগর সংলগ্ন ২০টি মৌজা কেসিসি এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রেরিত প্রস্তাব এখনো লাল ফিতায় বন্দি রয়েছে। ফলে চাহিদা মেটাতে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি-আবাসন, বস্তি, কৃষি ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে অপরিকল্পিত আবাসিক প্রকল্প, ড্রেন-সড়ক ইত্যাদি।

খুলনা সিটি কর্পোরশেনের কালেক্টর অব ট্যাক্সেস তপন কুমার নন্দী জানান, চলতি অর্থ বছরের রেকর্ড অনুযায়ী কেসিসি এলাকায় বর্তমান হোল্ডিং সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। ২০১৬ সালে যার সংখ্যা ছিল ৬৬ হাজার ৪৬৯টি। সে হিসেবে প্রতি বছরই নগরীতে হোল্ডিং বা স্থাপনার সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গতকারণে মানুষও বাড়ছে। মূলত মানুষের সংখ্যা বাড়ায় চাহিদার কারণে স্থাপনাও তৈরি হচ্ছে। তবে নতুন হোল্ডিং বা হোল্ডিং সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বর্তমানে বহুতল বিশিষ্ট ভবন বা ফ্লাট বাড়িগুলো অন্যতম কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।

কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবিরুল জব্বার জানান, খুলনা নগরীতে খাল খনন ও ড্রেন নির্মাণ, দৌলতপুরে শহর রক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৪৯১ কোটি ২৮ লাখ ৬১ হাজার টাকার প্রকল্প হাতে রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নগরীর সোনাডাঙ্গা বাইপাস রোড ও ড্রেন উন্নয়ন, নবীনগর সাব-ক্যাচমেট ড্রেন উন্নয়ন, নিরালা খাল, বাস্তুহারা খাল ও দেয়ানা চৌধুরী খাল উন্নয়ন এবং বাস্তুহারা খালের সাথে সংযুক্ত ড্রেনসমূহের উন্নয়ন, রূপসা রিভার ফ্রন্ট পার্ক নির্মাণ, মহানগরীর ২৩টি পুকুর উন্নয়ন, দৌলতপুর ও মহেশ্বরপাশায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মহেশ্বরপাশা শ্মশানঘাট উন্নয়ন, আলুতলা আউটলেট উন্নয়ন, লবণচরায় পাম্পিং স্টেশন ও আউটলেট গেট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

পরিসংখ্যান অফিস খুলনা জেলার সহকারী পরিসংখ্যান কর্মকর্তা তাজ মোহম্মদ ফয়ছাল এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০২২ সালে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য অনুযায়ি- খুলনা মহানগরীর সর্বমোট জনসংখ্যা ৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৩৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৫১, নারী ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭৫ জন এবং হিজরা ১০৯ জন।

তবে শিল্প শহর খুলনার খালিশপুর-দৌলতপুরসহ শিল্পাঞ্চলের সকল সরকারি পাটকল এবং দাদা ম্যাচসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও করোনা মহামারিতে কর্মসংস্থান হারিয়ে শ্রমিকদের একটি বড় অংশ শহর ছেড়ে যাওয়ায় জনসংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে বলে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানিয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা (ইউআরপি) ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে নগর ও নাগরিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আবাসন সংকট তৈরি হয়। পানি-বিদ্যুতের ওপর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে মাটি, পানি, আলো, বাতাসদূষণের সঙ্গে সঙ্গে শব্দদূষণও বেড়ে যায় মারাত্মকভাবে। এছাড়া মেডিকেল ও ই-বর্জ্যে পরিবেশদূষণ হয়। এতে মানুষ নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।

সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, খুলনাকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলা এবং নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ময়ূর নদী খনন, সলুয়া এবং মাথাভাঙ্গা এলাকায় বর্জ্য দ্বারা ডিজেল ও সার উৎপাদন এবং বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এরমধ্যে অন্যতম। এছাড়া কেসিসি মার্কেট সংলগ্ন মোড় ইতোমধ্যে সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং শুধু কেসিসি মার্কেট মোড় নয় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ২২টি মোড় আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।

জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ে সিটি মেয়র ভৈরব ও রূপসা নদী খননের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ময়ূর নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে। নগরীর পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে সরব বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান বলেন, নগরজুড়ে সারা বছর খোঁড়াখুঁড়ি লেগে থাকে। কেডিএ, ওয়াসার পাইপ লাইন, টেলিফোন লাইন, বিদ্যুৎ, সওজ ও কেসিসির সড়ক নির্মাণকাজে পৃথক পৃথকভাবে কাজ হয়। এতে অর্থের যেমন অপচয়, তেমনি ভোগান্তি বাড়ে মানুষের। আগামীর খুলনা গড়তে সব প্রতিষ্ঠানগুলোর সু-সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, নতুন নতুন আবাসিক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সেসব জায়গায় নাগরিক সুবিধার বিষয়টি গুরুত্বহীন থাকছে। বিল্ডিং কোড মেনে বাড়ি তৈরি হচ্ছে না। রাস্তা সংকুচিত হচ্ছে। বিনোদনের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে না। ফলে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খুলনাবাসী।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ