বরগুনার তালতলীতে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ব্যাটারির এসিড পান করে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রীর মা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, একই এলাকার সুলতানা হাওলাদারের ছেলে বখাটে আসাদুল (২৫ ) ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করায় বিভিন্ন সময়ে উত্যক্ত করে। এক সময় আসাদুল ওই ছাত্রীর মায়ের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে বিভিন্ন সময়ে ফোন দিতে থাকেন একপর্যায়ে ওই মেয়ের সাথে ভিডিও কলে কথা হয়। পরে ভিডিও কলে কথা বলার বিষয় মেয়ের মাকে জানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। মেয়েকে নগ্নভাবে ভিডিও কলে কথা বলতে বাধ্য করে। এবং সেই ভিডিও রেকর্ড করে রেখে দেন। পরে সেই ভিডিও ছাত্রীর মাকে দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এবং একদিনের মধ্যে টাকা না দিলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপরেই একটি ফেসবুক আইডি থেকে মেয়েটির কিছু আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওগুলো এলাকায় ভাইরাল হলে ওই মেয়ের মা অপমানে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাটারির এসিড পান করে। পরে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল সেবাচিমে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে। পরে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, কাজের সুবাদে তিনি ঢাকায় থাকেন। তার স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বাড়িতে এসেছেন। পরে বাড়িতে এসে তিনি স্বজনদের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছেন। এ ঘটনায় তিনি মামলা দায়েরর প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলেন, আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত করত। একটা সময় আমি তার সাথে কথা বলি। পরে আমাকে ব্লাকমেইল করে নগ্ন ভিডিও কলে কথা বলতে বাধ্য করে। এবং সেই ভিডিও রেকর্ড করে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে আমার মাকে দেখায় ও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভাইরাল করে দেন। এ লজ্জায় আমার মা আত্মহত্যা করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না পেলে আমিও আত্মহত্যা করবো।
এদিকে এ ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন আসাদুল। তাই তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যেই তালতলী থানা পুলিশ অবগত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারটির স্বজনরা থানা এসেছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ