ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৩৬ ঘণ্টা পর পঞ্চগড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল

প্রকাশনার সময়: ০৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪০ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:৫৬

কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় পঞ্চগড় জেলায় গত দুদিন ধরে বন্ধ রাখা মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ মামলায় এখন পর্যন্ত ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার (৬ মার্চ) পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা জানান, বর্তমানে পঞ্চগড় শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসাকে কেন্দ্র করে ঘটনায় ৬টি মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত মোট ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি অপরাধীদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে। আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভ-অবরোধ, শুক্রবার জুমআ নামাজের পর পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ, কাদিয়ানীদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজনের প্রাণহানি ঘটে। সর্বশেষ শনিবার রাতে গুজব ছড়িয়ে আবার উতপ্ত হয়ে উঠে পঞ্চগড়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলা সদর থানায় ৬টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে পুলিশের উপর হামলা ও বিক্ষোভ সংঘর্ষ নিয়ে দুটি, পুলিশের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি এবং র‌্যাবের পক্ষ থেকে একটি, স্কুল পোড়ানো নিয়ে একটি এবং কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ওসমান আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় আসামি ৮ হাজার ২ শত। রোববার (৫ মার্চ) পুলিশের বেশ কয়েকটি দল গত রাতে অভিযান চালিয়ে ৫৮ জনকে গ্রেফতার করে। এর আগে শনিবার রাতে ২৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে প্রধান গুজব সৃষ্টিকারী যুবদল নেতাও রয়েছে।

এদিকে পঞ্চগড় জেলায় গত দুদিন ধরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে মোবাইল অপারেটররা। এতে করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দুর্ভোগে পড়ে। তবে গেল ৩৬ ঘণ্টার পর সোমবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টার পর থেকে মিলছে ইন্টারনেট। দুপুরে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মেসেজ করে গ্রামীণফোন জানায়, আপনার এলাকায় গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক রয়েছে। স্বস্তি মিলেছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের।

জানা যায়, কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির গত শনিবার রাতে গুজব ছড়ানোর পর রাত ১২টার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত গুজব ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় তা রোধে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করে মোবাইল অপারেটরগুলো। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। বিপাকে পড়েন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। তারা সংঘটিত ঘটনার আপডেট ইন্টারনেট অচল থাকার কারণে সহজে পাঠাতে পারছিলেন না।

শহরের জাহিদ হাসান, সবুজ ইসলাম ও কামরুলসহ কয়েকজন জানান, হঠাৎ করে সকালে দেখি ইন্টারনেট নেই। পরে জানতে পারলাম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টার নেট পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে পেলাম।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত কয়েকজন সংবাদকর্মী জানান, শনিবার জেলা শহরে গুজব ঘটনার পর রাত ১২টা পর থেকেই ইন্টারনেট সচল পাচ্ছিলাম না। শহরে বেশ কিছু এলাকায় গুজবকে কেন্দ্র করে ভাংচুর, লুটপাট ও গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনার খবর ইন্টারনেটের মাধ্যমে অফিসে পাঠাতে পারছিলাম না। পরে দুপুরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে যেখানে ওয়াইফাই রয়েছে, সেখানে গিয়ে কোনভাবে ঘটনার আপডেট পাঠাতে পেরেছি। তবে ওয়াইফাইতেও লোডের গতি কম ছিল।

এছাড়াও জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার কাদিয়ানী সম্প্রদায় এলাকা পরিদর্শন করেন রেলপথমন্ত্রী। এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম এবং রংপুর রেঞ্জের ডিআইজ আব্দুল আলীম মাহমুদ ক্ষতিগ্রস্থ আহম্মদ নগর এলাকায় কাজ করছেন।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ