বরিশালে ২০০ শয্যার শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। দুই বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষে চিকিৎসা শুরুর কথা ছিল। তবে, ৬ বছর পেরোলেও ভবনের কাজই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে সবশেষ চলতি বছরের জুনে কাজ শেষের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে শেষ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরের আমানতগঞ্জ এলাকায় শিশুদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয় ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। এখানে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০ তলা ভিতের ওপর প্রাথমিকভাবে চারতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের কার্যাদেশ অনুযায়ী, ২০১৯ সালে হাসপাতালটির ভবনের কাজ শেষ করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরুর কথা। তবে ৬ বছরে ভবন নির্মাণই শেষ হয়নি।
জানা যায়, বরিশাল বিভাগে শিশুদের জন্য ২০০ শয্যার প্রথম হাসপাতাল এটি। এখানে বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, রেডিওলজি, ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি বিভাগ, অপারেশন ব্লক, থেরাপি বিভাগ, প্রশাসনিক ব্লকসহ নানা বিভাগ থাকবে। শিশুদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার কথা এই হাসপাতালে। এত দিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় চাপ বাড়ছে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে। বিভাগে বর্তমানে শিশুদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে শুধু এখানে। তবে শেবাচিমের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা আছে মাত্র ৩৬টি। এ জন্য সারা বছরই শিশু ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। শয্যা সংকটে এক বিছানায় দুই-তিন শিশু রেখেও চিকিৎসা দেওয়া হয়। অনেকের জায়গা হয় মেঝেতে।
শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম আর তালুকদার মুজিব বলেন, শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতালটি চালু হলে শেবাচিমের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ কমবে। বিশেষায়িত হাসপাতাল হওয়ায় শিশুরা উন্নত চিকিৎসাও পাবে। দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা দরকার।
নির্মাণাধীন শিশু হাসপাতালটির ঠিকাদার বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, হাসপাতালের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা ছিল। এ জন্য নির্মাণ শুরু করতে দেরি হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতাল এলাকায় থাকা একটি মজা পুকুর ভরাট করে কাজ শুরু করতে হয়েছে। এ জন্য চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।
বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কামাল হোসেন হাওলাদার বলেন, হাসপাতাল ভবনের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করে হস্তান্তরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। বরিশাল বিভাগের কোথাও বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল না থাকায় উন্নত চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ জন্য সুকান্ত বাবু হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু সময়ের দাবি।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ