ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আহত হননি বরিশালের মেয়র, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা

প্রকাশনার সময়: ১৯ আগস্ট ২০২১, ০৫:১৮ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২১, ০৮:১৩

আহত হননি বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। বুধবার রাত ১১টার দিকে আনসার সদস্যদের গুলিতে তিনি আহত হন বলে শহরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাত তিনটার দিকে মেয়র জানিয়েছেন, তিনি আহত হননি, সুস্থ আছেন।

তিনি বলেন, ছরাগুলি করা হয়েছিল। গুলি আমার গায়ে লেগেছিল। ব্যথা পেয়েছি। তবে আমি গুলিবিদ্ধ হইনি। আমার গায়ে জ্যাকেট ছিল। সেসময় আমার সঙ্গের লোকেরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। তাদের গুলি লেগেছে। অনেকেই আহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে কতজন জানি না।

মেয়র বলেন, সেসময় আমি মাথা ঠান্ডা রেখেছি। মন বিষণ্ণ হওয়ায় বাসায় চলে এসেছি। এই সুযোগে শহরে খবর ছড়িয়েছে যে আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছি।

এর আগে বুধবার (১৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ব্যানার সরানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এনামুল হক।

এসময় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন বলে শহরে গুজব ছড়ায়। স্থানীয় ছাত্রলীগের কিছু সদস্য দাবি করেন, সেসময় মেয়রসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনার জের ধরে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা চালান বলে দাবি করেছে পুলিশ। গুলি ছুড়ে আনসার সদস্যরা তখন ইউএনওর বাসভবনে প্রবেশকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।

রাতের এ ঘটনায় স্থানীয় অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি ছাত্রলীগের। এদিকে, তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। আনসার সদস্যও আহত হয়ে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আহতদের অনেকেই শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহতদের দেখতে রাতেই হাসপাতালে গিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস। তবে রাতের এ ঘটনায় আহতদের প্রকৃত সংখ্যা কত তা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ইউএনও মুনিবুর রহমান বলেন, আনসার সদস্যদেরকে গুলি চালাতে আমি কোনো নির্দেশ দেইনি। আমার বাসভবনে অনুপ্রবেশকারীরা আমাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘটনার আকস্মিকতায় আনসার সদস্যরা গুলি চালান। বাসায় আমার বৃদ্ধ বাবা-মা করোনা আক্রান্ত। আমার যা মানসিক অবস্থা তাতে এর বেশি আপাতত কিছু বলতে পারছি না।

এ ঘটনায় বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের সামনে থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত রাখা হয়।

ইউএনওর বাসভবনে অনুপ্রবেশের ঘটনার পর বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল, পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আকতারুজ্জামান, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে যান।

বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করতে বলেছেন। মাত্রই শোক দিবস শেষ হয়েছে। এরমধ্যে এরকম একটি ঘটনা ঘটে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় বরিশালের রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ বাসস্টেশন এলাকায় সড়কে বাস আড়াআড়িভাবে রেখে অবরোধ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলির প্রতিবাদে তারা অনানুষ্ঠানিক এ কর্মসূচি শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এসইউ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ