২৫ বছর আগে মায়ের কোল আলোকিত করে জন্ম নেয়া এক মেধাবীর নাম ইমাম হোসাইন। ফুটফুটে চেহারার ইমাম হোসাইন ঘর আলোকিত করলেও পরিবারের কেউ তখন জানতে পারেনি সে পৃথিবীর আলো দেখতে পারে না।
প্রখর মেধার অধিকারী ইমাম হোসাইন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের শেখ আতাউর রহমানের সন্তান। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনিই সবার বড়।
তবে জন্মান্ধ হয়েও পবিত্র কোরআনের আয়াত শুনে শুনে গ্রামের আন্ধারমানিক হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে কুরআনের হাফেজ হয়েছেন ইমাম হোসাইন।
ইমাম হোসাইন বলেন, তার পিতা একজন অটোরিক্সা চালক, ২ ভাই এক বোনের সংসারে তাদের খুবই কষ্টে জীবনযাপন করতে হয়। পিতার রোজগারেই চলে তাদের সংসার। জন্ম থেকে অন্ধ বলে তিনিও পরিবারে তেমন কোন কাজ করতে পারেন না। তিনি কোন প্রকার ভাতাও পান না। তবে দমে যাননি, মানুষের কাছে হাতও পাতেননি।
মাদ্রাসা থেকে পবিত্র কোরআন শুনে শুনেই মুখস্ত করে হাফেজ হন। এখন হেফজ শেষ করে বর্তমানে উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠান জামিয়া দারুল কুরআন ঝিটকায় হেফজ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানায়, সে অল্পকিছুদিন যাবত এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কারো সহযোগিতা ছাড়াই বাথরুম যেতে পারেন এবং আলো অন্ধকার অনুভব করতে পারেন।
বয়ড়া ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুর রহমান বলেন, ইমাম হোসাইনকে আমি চিনি। সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে প্রতিবন্ধীদের নাম চেয়েছিলো আমরা সকল প্রতিবন্ধীদের নাম দিয়েছি। ভাতার লিস্টে তার নাম দেওয়া হয়েছে। কবে পাবে এ বিষয় সমাজসেবার অফিসার ভাল বলতে পারবে।
উপজেলা সহকারী সমাজ সেবা অফিসার জীতেন্দ্র কুমার মন্ডল বলেন, ভাতা পান কি না আমার জানা নেই। তবে ভোটার আইডি কার্ড আর মোবাইল নাম্বার নিয়ে আসতে বলেন ব্যবস্থা করে দিব।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী খান বলেন, তিনি ভাতা পান কি না আমার জানা নেই। তবে এরকম যদি কেউ থাকে তাহলে আইডি কার্ড আর মোবাইল নিয়ে আসতে বলেন- আসলে আমরা দেখবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অন্ধ হাফেজ ইমাম হোসাইনকে আমি চিনি। সে ভাতা পায় না এটা আমার জানা ছিলো না। তবে সরকারি যতরকম সহযোগিতা আসে তাকে আমরা দেওয়ার চেষ্টা করি এবং আজকেই আমি তার প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যাপারে কথা বলবো। আশা করি দ্রুতই সে ভাতা পাবেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ