কৌশলে সব সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর করেছে পুত্র ও পুত্রবধূ। অমানবিক এই ঘটনা ঘটেছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শেখ সাদী গ্রামে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে মেলঅন্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় বৃদ্ধ ইয়াদ আলী প্রমানিক (৬০) বুধবার দুপুরে মেলান্দহ থানায় মামলা করলে পুলিশ ওইদিনই পুত্রবধূ মোছা. মোর্শেদা বেগম (৩০) কে গ্রেফতার করতে পারলেও পলাতক রয়েছে তার পুত্র মো. ওমর ফারুক (৩৫)।
শেখ সাদী গ্রামের বৃদ্ধ ইয়াদ আলী প্রমানিক জানান, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৫)র ঘরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে মো. মোস্তফা শারীরিক প্রতিবন্ধী। একমাত্র কন্যা বিলকিসের বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। ছোট ছেলে মো. ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম বাড়িতে থাকেন।
বৃদ্ধ ইয়াদ আলী প্রমানিক মাটি কাটা, ভ্যান চালানো বা কখনো কলা ক্রয়-বিক্রয় করে সংসার চালাতেন। বয়সের ভারে শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ায় এখন আর কোন কাজ করতে পারেন না। ইয়াদ আলী প্রমানিক স্ত্রী সন্তানদেও নিয়ে সাড়ে ৩৯ শতাংশ জমিতে বসবাস করতেন। কয়েকমাস আগে ছোট ছেলে ওমর ফারুক দুই শতাংশ জমি লিখে নেওয়ার কথা বলে বাবাকে মেলান্দহ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে নিয়ে সাড়ে ৩৯ শতাংশ জমিই লিখে নিয়েছেন। জমি লিখে নেবার পর ভরণপোষণ না দেওয়ায় বৃদ্ধ এই দম্পতি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
সম্প্রতি ঘটনাটি জানতে পেরে ওই জমির দলিল বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার সকালে এ খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পুত্র ওমর ফারুক ও পুত্রবধূ মোর্শেদা বেগম বাবা-মাকে মারধর করে। আহত এই বৃদ্ধ দম্পতিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম অমানবিক এই ঘটনার জন্য প্রতারক পুত্র ও পুত্রবধূর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বৃদ্ধ দম্পতির সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানান। মেলান্দহ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃদ্ধ বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের হলে পুত্রবধূকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক রয়েছে তার পুত্র ওমর ফারুক। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওমর ফারুক গ্রেফতার হবে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ