নড়াইল সদর হাসপাতালের আউটডোরে ৯জন মেডিকেল অফিসারের জায়গায় চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র ২জন। এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। অনেক রোগি চিকিৎসা না পেয়ে চলে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
চিকিৎসক সংকটে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগিদের নিত্যদিনের চেকআপ করতে পারছেন না। যেকারণে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ৪০টি পদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক, সহকারি পরিচালকসহ আছেন মাত্র ১৩জন।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১শ’ শয্যার সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ইনডোরে ১শ ৫০ এবং আউটডোরে প্রায় ৩শ’ জন চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর হাসপাতালে দেখা গেছে, সদর হাসপাতালের আউটডোরের ৯জন মেডিকেল অফিসারের জায়গায় চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র ২জন। ১২০ নম্বর কক্ষে ২জন এবং ১১০, ১১৪, ১১৫,১১৭,১১৯ নম্বর কক্ষে ১জন করে মোট ৭জনের মধ্যে কোনো মেডিকেল অফিসার নেই। এছাড়া এদিন শিশু বিশেষজ্ঞ, নাক-কান-গলা, গাইনী ও ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রেফার করা রোগি দেখছেন।
সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মুন্সি আসাদুজ্জামান টনি বলেন, হাসপাতাল থেকে ৬জন চিকিৎসক অন্যত্র চলে গেছেন। কয়েকজন ছুটিতে রয়েছেন। এর মধ্যে ৪জন চিকিৎসক সিভিল সার্জনের অধীনে সদর হাসপাতালের আউটডোরে সংযুক্তিতে কাজ করলেও এক সপ্তাহ তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ২জন প্রমোশনে অন্যত্র চলে গেছেন। কয়েকজন ছুটিতে রয়েছেন। এ অবস্থা চলছে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে। আমরা বার বার মন্ত্রণালয়ে চিকিৎসক সংকট সমাধানের জন্য চিঠি দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
নড়াইল পৌরসভার বেনাডোব এলাকার রুমিছা বেগম জানান, তিনি ১১৫ নম্বর কক্ষে হাতে ব্যথার জন্য চিকিৎসক দেখানোর জন্য পরপর দু’দিন আসলেও দেখাতে পারছেন না। সদরের মুলিয়া গ্রামের মিনতি বিশ্বাস বলেন, গত দু’দিন সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে আসলেও তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে শুনেছি।
এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের নব নিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল গফ্ফার চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা মহা বিপদের মধ্যে রয়েছি। ৪০জন চিকিৎসকের জায়গায় তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারি পরিচালকসহ মাত্র ১৩জন চিকিৎসক হাসপাতালে রয়েছেন। এর মধ্যে ২জন ছুটিতে রয়েছেন। বিষয়টি এমপি মহোদয়ও জানেন। অমরা চেষ্টা করছি চিকিৎসক সমস্যার সমাধান করতে।
এ বিষয়ে নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, যারা প্রমোশন পেয়েছেন তাদেরতো যেতেই দিতে হবে। তবে আমরা চিকিৎসক সংকট সমাধানের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আশা করছি খুব শিগগিরই সংকট কেটে যাবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ