বরগুনার আমতলীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে।
সেই সুড়ঙ্গপথ দিয়ে চলছে ইটসহ ভাটার মালামাল পরিবহন। এতে করে বাঁধসহ আশপাশ এলাকার ১০ হাজার মানুষ জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই দ্রুত বাঁধ সংস্কারসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালে আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা গ্রামে পায়রা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাছে স্থানীয় বদিউল আলম মুন্সি নামে এক ব্যাবসায়ী মুন্সি ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। পরে তিনি কুকুয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেন মৃধার কাছে ভাড়া দেন ইটভাটাটি। সম্প্রতি ওই ইটভাটায় ইট পোড়ানোর মালামাল আনা নেওয়ার সুবিধার্থে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধ কেটে তৈরি করা সুড়ঙ্গ দিয়ে ইটসহ ভাটার মালামাল আনা-নেওয়া হচ্ছে। বাঁধের ওপর কাঠের গুঁড়ো দেওয়া হয়েছে এবং ঝুঁকি নিয়েই মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকাবাসী আবুল হোসেন মৃধাকে নিষেধ করলেও তিনি বাঁধ বেটে সুড়ঙ্গ করা থেকে বিরত হননি। এভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ফেলায় হুমকিতে পড়েছে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা, খেকুয়ানী, ডালাচারা, বাজারখালী ও গুলিশাখালী গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় আঙ্গুলকাটা গ্রামের খোকন মানিক বলেন, বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ।
বাজারখালী গ্রামের আহসান হাবীব বলেন, প্রাকৃতিক ভাবেই উঁচু জোয়ার কিংবা জলোচ্ছ্বাস হলে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে জানমাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
ডালাচারা গ্রামের মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে ইটভাটার ভাড়া নেওয়া মালিক আবুল হোসেন মৃধা বলেন, এ বাঁধ আমি কাটিনি। সুড়ঙ্গটি মুন্সি ব্রিকসের মালিক বাদল মুন্সি নিজেই করেছেন। আমি ভাড়া নিয়ে ইটভাটা চালাই। অপরদিকে এবিষয়ে মালিক বাদল মুন্সির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেউ কাটতে পারবে না। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ