লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে। ভুয়া অভিযোগ এনে আবদুর রহমান নামে নিয়োগ পরীক্ষায় নির্বাচিত এক প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা ফৌজদারি মামলার আসামিকে নিয়োগদানের মাধ্যমে এ অনিয়ম করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিয়োগ বঞ্চিত আবদুর রহমান ২৭ ডিসেম্বর রামগতি সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় নিয়োগ কমিটির সভাপতি রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসিসহ নয়জনকে আসামি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর আলোকে আবেদনকারী প্রার্থীদের নিয়ে গত ২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় ওই ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড চরকলাকোপা এলাকার আবদুর রহমান প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। আর মো. রুবেলকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়।
এদিকে ১৯ অক্টোবর আব্দুর রহমানকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে পোশাক দেওয়াসহ দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরই মধ্যে হঠাৎ করে পুলিশ ভেরিফিকেশনে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্যের অভিযোগ তুলে তাকে বাদ দিয়ে ওই পদে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা রুবেলকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তও। বিজ্ঞপ্তির চার নম্বর শর্তে ফৌজদারি মামলার আসামি এ পদে নিয়োগ না পাওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও রুবেল রামগতি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। হামলা, প্রাণনাশের হুমকি ও নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের হওয়া ওই মামলাটি পিবিআইতে তদন্তাধীন রয়েছে। এ ছাড়াও কয়েক মাস আগে বরিশালে মোবাইল চুরির একটি মামলায় রুবেল কারাবরণও করেছিলেন।
অভিযোগের ব্যাপারে রামগতি থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন জানান, আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নেতিবাচক মন্তব্য থাকায় তা প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে।
তবে ফৌজদারি মামলা থাকার পরও রুবেল পুলিশের সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রুবেলের একটি মামলা আদালতে এবং অপরটি ভিন্ন জেলায় হওয়ায় আমরা এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি এসএম শান্তনু চৌধুরী জানান, পুলিশি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। বিষয়টি তিনি আদালতে লিখিতভাবে জানাবেন।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ