সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীর দুর্গাপুরেও প্রতিবারের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সেই লক্ষে ইতোমধ্যে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই পাঠানোর কাজ শুরু করেছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বরাত দিয়ে উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, চলতি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাবে। অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারি মাসের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলেও জানানো হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. জাহীদুল হক জানান, উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭৬টি শিক্ষা প্রতিতিষ্ঠান রয়েছে। এসবের মধ্যে মাধ্যমিক স্কুল ৪৫টি মাদ্রাসা ১৯টি এবং কারিগরি ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ১৮ হাজার ৭০০জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
যার ফলে এ উপজেলা থেকে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০টি নতুন বইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়। ওই চাহিদার উপর উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭৪ হাজার নতুন পাঠ্যপুস্তক এসেছে। যে পাঠ্যপুস্তক উপজেলায় এসেছে তা প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছানো হয়ে গেছে। অবশিষ্ট পাঠ্যপুস্তক জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছালে, উপজেলা থেকেও দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, উপজেলার ইফতেদায়ী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি দাখিলের সপ্তম ও নবম শ্রেণি মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণি এবং কারিগরি শিক্ষার্থীদের কোন পাঠ্যপুস্তুক উপজেলায় আসেনি। তবে অল্প সময়ের মধ্যে এসব পাঠ্যপস্তুক আসবে বলে জানান।
এ সময় তিনি আরো বলেন, সরকার কোমলমতি শিশুদের কথা বিবেচনা করে বছরের প্রথমদিনই তাদের হাতে বই পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি করোনা মহামারির সময় এবং অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারির ১ তারিখে বই তুলে দেওয়া হবে।
এ দিকে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মকলেছুর রহমান জানান, এ উপজেলায় ৮২টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩হাজার ১১৭জন। এর মধ্যে শিশু শ্রেণি ১ হাজার ৭৫৯ জন, প্রথম শ্রেণি ২হাজার ৩৫৯ জন দ্বিতীয় শ্রেণি ২ হজার ৪৭৪ জন তৃতীয় শ্রেণি ২ হাজার ২৪৫ জন চতুর্থ শ্রেণি ২ হাজার ৩২৪ জন এবং পঞ্চম শ্রেণি ২ হাজার ৫৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন পাঠ্যপুস্তক এখনো আসেনি। নতুন যেসব পাঠ্যপুস্তক এসেছে তা আমরা উপজেলায় ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানে পাঠিয়েছি। নতুন বছরের জানুয়ারির ১ তারিখে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।
শিক্ষা খাতে সরকারের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরে রাজশাহী- ৫ (দুর্গাপুর- পুঠিয়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসার ডা. মনসুর রহমান বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় কাগজ, কালিসহ পুস্তক তৈরির সব উপকরণের দাম লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতেও শিক্ষাখাতকে অগ্রাধিকারে রেখে আগামী ১ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকেই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে একযোগে বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিতিতে বই বিতরণ উদযাপিত হয়ে আসছে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ