নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নে (ইউপি) টিসিবির পণ্য ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরিবেশক (ডিলার) বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই ইউনিয়নের আট ইউপি সদস্যকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ডিলারের দুই প্রতিনিধি মো. সোলায়মান আলী ও মো.নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যরা সোমবার ২৬ ডিসেম্বর ও গত ১৪ ডিসেম্বর দুই দফা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আগের অভিযোগটির তদন্ত শেষ না হওয়ায় অভিযুক্তরা ইউপি সদস্যদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। নিরুপায় হয়ে গতকাল সোমবার তারা আরেকটি অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, আব্দুর রহমান ও নজরুল ইসলামসহ ওই আট ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার ‘মেসার্স মালেক ট্রেডার্স ’ চাপিলা ইউনিয়নের ২ হাজার ২৪০জনকে ভর্তুকি মূল্যে তেল চিনি ও ডাল দেওয়ার কাজটি পান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবস্থান দূরে হওয়ার কারনে চাপিলা ইউনিয়নের নাছির উদ্দিন ও সোলায়মান আলীকে পণ্য বিতরণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেন ওই ঠিকাদার।
সম্প্রতি সুবিধাভোগীদের মাঝে বরাদ্দকৃত পণ্য বিতরণের সময় ১ কেজি চিনির বিপরীতে ২৫০ গ্রাম করে কম দিচ্ছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এ সময় সুবিধাভোগীরা ইউপি সদস্যদের কাছে ওজনে কম দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করলে প্রতিবাদ জানান তারা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঠিকাদারের দুই প্রতিনিধি ইউপি সদস্যের সাথে অশোভন আচরণসহ ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। তাদের এমন আচরণের বিষয়ে চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি তারা।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দুই প্রতিনিধি নাছির উদ্দিন ও সোলায়মান আলী এলাকায় প্রভাবশালী ও চেয়ারম্যানের সাথে বিশেষ সম্পর্ক থাকায় এই অন্যায়ের প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা, বাধ্য হয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউপি সদস্যরা।
এ ব্যাপারে পরিবেশকের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পরিবেশকের প্রতিনিধি নাছির উদ্দিন অভিযোগটি ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ওজনে কম দেওয়া বা ইউপি সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে না। আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করতেই এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, টিসিবির পণ্য কম দেওয়া এবং ইউপি সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণের সত্যতা মেলায় ঠিকাদারের প্রতিনিধিদের মৌখিত ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগটি ইউএনও দফতর থেকে তার কাছে এসেছে, সেটির তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে ঠিকাদারের দুই প্রতিনিধির সাথে বিশেষ সম্পর্কের অভিযোগটি সত্য নয় বলে দাবি করেন চেয়ারম্যান।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় মুঠোফোনে জানান, তদন্ত প্রতিবেদন সত্য হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ