জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ৫৯ বছরের বেশি হওয়ায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী পাকু দাসকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। তবে এনআইডির হিসেবে মায়ের ১৩ বছর ৩ মাস আগে জন্ম তার।
জানা গেছে, পাকু দাসের মায়ের জন্ম ১৯৬৮ সালের ৩ আগস্ট। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ছেলের জন্ম ১৯৫৫ সালের ২০ এপ্রিল।
এদিকে চাকরি হারিয়ে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাকু দাস। মা, স্ত্রী ও এক সন্তানের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। সিটি করপোরেশনের চাকরির সুবাদে থাকেন নগরের মাদারবাড়িতে সেবক কলোনিতে। এখন চাকরি চলে যাওয়ায় কলোনিতে থাকা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় চাকরি ফেরত পেতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিচ্ছেন পাকু দাস ও তার মা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবঞ্চিত মা-ছেলে বলছেন, চাকরি না থাকলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।
পাকুর মা রাধা রাণী দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা অশিক্ষিত মানুষ। লেখাপড়া জানি না। জাতীয় পরিচয়পত্র করতে গিয়েছিলাম। তারা সব করে দিয়েছিল। এখন শুনি ছেলের বয়স আমার চেয়ে বেশি। আমার বয়সই ৫৯ হয় নাই। সেখানে ছেলের বয়স হয়ে গেছে ৫৯ বছরের বেশি। এ জন্য চাকরিটাও চলে গেল ছেলের। তার (ছেলের) বেতনের টাকায় চলতাম। এখন মানুষের দয়া-দাক্ষিণ্যে চলতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাকুর বয়স ৩০ থেকে ৩২ বছরের বেশি হবে না।
পাকু দাস বলেন, চাকরি না থাকলে খাবো কী? বৌ, বাচ্চা, মাকে নিয়ে যাবো কোথায়? এজন্য প্রতিদিন অফিসে যাচ্ছি কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। বেতনও পাচ্ছি না।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল হতে পারে। তবে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। যদি সংশোধনের আবেদন করেন, তাহলে তা বিবেচনা করা হবে।
সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ বলেন, অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে যাদের বয়স ৫৯ বছরের বেশি হয়েছে, তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাকু দাসের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে মেয়রের কাছে আবেদন করলে আবার চাকরি ফেরত পেতে পারেন পাকু।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১২৮ জন অস্থায়ী কর্মীকে বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে চাকরি হারাতে হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ