চট্টগ্রামে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এবং ট্রাফিক পুলিশের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের ফলে সড়কে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে চট্টগ্রাম থ্রি-হুইলার অটোটেম্পো মালিক-চালক আন্দোলন কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন এই দাবি করেন।
এ সময় শ্রমিকদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছেন। এর মধ্যে সেবা সহজ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রাম থ্রি হুইলার মালিক-চালক আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব মো. নজরুল ইসলাম খোকন লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মালিক ও শ্রমিক বান্ধব। কিন্তু সরকারের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্টকারী যারা সরকারের বেতন ভাতা নেওয়ার পরও মালিক শ্রমিকদের জিম্মি করে অবৈধ অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন, তারা কোন দলের এজেন্ট তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম নগরীতে নগরবাসীর যাতায়াতের ৭৫ ভাগ সেবা প্রদান করেন অটো টেম্পু চালকরা। এ পেশার সঙ্গে লাখ লাখ পরিবারের দৈনন্দিন আয় রোজগার জড়িত।
শ্রমিকদের কল্যাণে অবিলম্বে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ৬ দফা দাবি পূরণ করতে পুলিশ প্রশাসন ও বিআারটিএ এর প্রতি আহবান জানান সংবাদ সম্মেলনে। ৬ দফাদাবিগুলো হচ্ছে- পুলিশ ও বিআারটিএর সমন্বয়ে গঠিত আরটিসি কমিটির কয়েকজন মালিক শ্রমিক নেতা নামধারী অযোগ্য প্রতিনিধি ও বর্তমান সকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত ও সুনাম ক্ষুন্নকারী, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত কতিপয় ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও বিআরটিএর কর্মকর্তারা এই সেক্টরকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে।
মালিক শ্রমিকদের গলা চেপে ধরে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ‘চেসিস নাম্বার অস্পষ্ট বা ঘষামাজার অজুহাতে ফিটনেস প্রদানে গড়িমসি ও ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করে ফিটনেস প্রদান করা এবং রুট পারমিট নবায়নে গাড়ির মালিক বা মালিকদের প্রতিনিধির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। বছরের পর বছর ঝুলে থাকা আবেদনকৃত অটোটেম্পোর রুট পারমিট দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে। রুট পারমিট ইস্যু না করা পর্যন্ত ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, আয়করসহ সব ধরনের ধার্যকৃত সরকারি ফি মওকুফ করতে হবে অথবা রুট পারমিটের জন্য ট্রাফিক আইনের জরিমানা আদায় বন্ধ করতে হবে। নগরীতে বিভিন্ন সড়কের মোড়সমূহে যাত্রী উঠা নামার স্থান নির্ধারণ করতে হবে। তা না করে রং পার্কিং বা প্রতিবন্ধকতা মামলা দিয়ে চালক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। রং পার্কিং বা প্রতিবন্ধকতা মামলার জরিমানা সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। ট্রাফিক বিভাগের প্রসিকিউশন শাখায় চালক মালিকদের সাথে বৈষম্য মূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে। প্রসিকিউশন শাখা দালাল মুক্ত করতে হবে। ডিজিটাল পস মেশিনের মাধ্যমে দ্বিগুণ জরিমানা আদায় বন্ধ করতে হবে। বছরের পর বছর
থ্রি হুইলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে মাঠ পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। বিআরটিএ লাইসেন্স শাখার ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। অযোগ্য সিন্ডিকেট গঠনকারী মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দ্বারা গঠিত আরটিসি কমিটি বিলুপ্ত করে যোগ্য প্রনিতিনিধি দ্বারা আরটিসি কমিটি গঠন করতে হবে।চট্টগ্রাম থ্রি-হুইলার মালিক চালক আন্দোলন কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন, জাতীয় শ্রমিক লীগ, চট্টগ্রাম মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব। আরো উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালী থানা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ভাড়াটিয়া পরিষদের সেক্রেটারী গোলাম মোস্তফা, সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দীন কোম্পানী, হাশেম কোম্পানি, শাহাব উদ্দিন কোম্পানী, শমিম কোম্পানি, মুসা কোম্পানি, ফারুক কোম্পানি ও পরিবহন শ্রমিক নেতা সালাহ উদ্দিন, ইকবাল প্রমুখ।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ