এক সময়ের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ছিলো ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করা। রাজ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সেই প্রথা বেশি দেখা যেতো। সেই হারানো সংস্কৃতিতে ফিরে যাওয়া আর নিজের বিয়েকে আনন্দঘন ও বৈচিত্রময় করে তুলতে ঘোড়ার পিঠে চড়ে বিয়ে করেছেন ফরিদপুরের হেমায়েত হোসেন নামে এক যুবক।
হেমায়েত হোসেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের মিনাজদিয়া চান্দাখোলা গ্রামের চাঁন মাতুব্বরের পুত্র।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকালে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী সোনাপুর গ্রামের রিজু ফকিরের বড় কন্যা সাদিয়া আক্তারের সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয় ওই যুবককের। এমন সংস্কৃতি তুলে ধরায় খুশি স্থানীয়রা ও বরযাত্রীরা।
জানা যায়, বড় হেমায়েত হোসেনের বাড়ি থেকে কনে সাদিয়ার বাড়ি দুই থেকে তিন কিলোমিটারের পথ। পুরো পথেই তিনি ঘোড়ার পিঠে চড়ে কনের বাড়িতে পৌঁছান। ঘোড়ার পিঠে চড়ে বর এসেছে এমন খবরে পথ থেকেই জড়ো হতে থাকে শিশু-কিশোর থেকে বয়োজ্যেষ্ঠরা। এমন অদ্ভুত দৃশ্য উপভোগ করেন সকলেই। এভাবেই বিয়ে বাড়ির গেট পর্যন্ত রাজার বেশে পৌছান বর। সেখান থেকে কনের বাড়ির সকলেই তাকে সাদরে গ্রহণ করে নেন। যদিও কনেকে ফুল দিয়ে সাজানো প্রাইভেটকারে নিয়ে যান।
বর হেমায়েত হোসেন বলেন, ‘বিয়ের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। শখ পূরণে এবং বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ সংস্কৃতি ধরে রাখতে ব্যতিক্রমী এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। এতে আমাদের অনেক আনন্দ হয়েছে। দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
বরযাত্রীরা ও কনে বাড়ির অনেকেই বলেন, ‘আজকাল গ্রামে এগুলো দেখা যায় না। কালের বিবর্তনে আমরা আমাদের সংস্কৃতি হারাতে বসেছি। এ দৃশ্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। এগুলো আমাদের সংস্কৃতির অংশ। বর রাজার বেশে ঘোড়ায় চড়ে যাবে।’
কনের বাবা রিজু ফকির বলেন, ‘আমার বড় মেয়ের বিয়ে, ধুমধামের সাথে বিয়ে দেয়ার ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে। সেই সাথে আলাদা আনন্দ দিয়েছে আমার জামাই ঘোড়ার পিঠে চড়ে এসেছে। আমি দোয়া করি, ওদের দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুন্দর হোক।’
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ