ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্তানদের বিরোধ : ৪০ ঘণ্টা পর বাবার মরদেহ দাফন

প্রকাশনার সময়: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৪২

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বাবার মৃত্যুর পর উঠানে মরদেহ ফেলে রেখে টাকা নিয়ে সন্তানদের বিরোধের ঘটনায় সেই মনির আহমদের (৬৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) মৃত্যুর প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর সকাল দশটায় কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান গ্রামের দিঘীর পাড় এলাকায় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর সাথে গতকাল রোববার বিকেলে বাবার মরদেহ উঠানে ফেলে রেখে তার অবসরের পর পাওয়া ব্যাংক জমা ৫০ লক্ষ টাকা ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে ৫ সন্তান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। সেদিন তারা বাবার মরদেহ একটি ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখে বিবাধে লিপ্ত হয়ে পড়েন।

এমনকি বাবার দাফনে বিলম্ব হওয়া নিয়েও সন্তানরা ভ্রুক্ষেপ করেননি। পরে সন্ধ্যায় স্থানীয়রা পুলিশ ও চেয়ারম্যানকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্তানদের নিয়ে বৈঠকে বসেন থানার ওসি দুলাল মাহমুদ ও ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম। এতে মরদেহ দাফনে প্রায় ৪০ ঘণ্টা বিলম্ব হয়।

বৈঠকে জমা ৫০ লাখ টাকা থেকে চিকিৎসা খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সন্তানদের সবার মাঝে সমহারে বণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আজ সোমবার সকাল দশটায় মনির আহমদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

মৃত মনির আহমদ পদ্মা অয়েলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাত এগারোটায় তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয়। মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে তার মেয়ে বেবি আক্তারের সঙ্গে ভাইদের ঝগড়া শুরু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনির আহমদের সংসারে স্ত্রী, ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে আছেন। তিনি পদ্মা অয়েলের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর ৫০ লাখ টাকা পেনশন পান। আর সে টাকা তিনি তার ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখেন। তার বড় ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমের (৪০) অভিযোগ, তাদের বোন বেবি আক্তার কাউকে না জানিয়ে ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা তুলে নেয়। তার ছোট ভাই আলমগীর সৌদি আরবে থাকেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়ে বেবি আক্তার বলেন, বাবার শেষ বয়সে আমরা সেবা-যত্ন করেছি। আমরা বাবার টাকা নিইনি।

ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, এই ঘটনায় আমরা জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সন্তানদের নিয়ে বৈঠক করি। বৈঠকে মনির আহমদের অসুস্থতার কারণে যে টাকা খরচ হয়েছে সেগুলো বাদ দিয়ে বর্তমানে তার একাউন্টে যে টাকা আছে সেগুলো তার সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সোমবার সকালে মরদেহ দাফন করা হয়। প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর দাফন করা হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ