ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জবই বিলে নান্দনিক উদ্যোগ : প্রশংসিত ইউএনও মামুন

প্রকাশনার সময়: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৩৫

নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জবই বিল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম একটি বৃহৎ ও প্রাচীন বিল। মৎস্য, প্রাকৃতিক ও পর্যটন সম্ভাবনাময় এ বিলটিকে ঘিরে এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার একটি ইকো-ট্যুরিজম পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।

বর্তমানে খাদ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সাপাহারের ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন বিলটিকে পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নান্দনিক কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জবই বিলের সৌন্দর্যবর্ধনে বিলে ব্রিজ ও ব্রিজের রাস্তা ধরে দুই পার্শ্বে সারি সারি পিলারগুলো সংস্কার করণ এবং লাল হলুদ ও সাদা রঙয়ের ছোঁয়ায় রাঙিয়ে তোলা হয়েছে। যার ফলে বিলের সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিলের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা রাস্তার দুই ধারে দর্শনার্থীদের বসার জন্য দৃষ্টিনন্দন বিশ্রামাগার নির্মাণ এবং প্রবেশ মুখে কনক্রিটের উপর ইসপাত খচিত ‘জবই বিল’ লেখা দৃষ্টিনন্দন ফলক স্থাপনের মধ্যেদিয়ে বিল এলাকা সুসজ্জিত করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০২১ সালের এপ্রিলে সাপাহারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পদে যোগদান করেন মো. আব্দুল্যাহ আল মামুন। তখন করোনা মহামারির প্রকোপ চলমান। সীমান্তবর্তী উপজেলা হিসেবে সাপাহারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ছিল চ্যালেঞ্জিং। ইউএনওর নেতৃত্বে তার টিম করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি সাপাহার উপজেলার শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখাসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন।

জবই বিল মৎস্য সমবায় সমিতির দলনেতা মমতাজ উদ্দিন বলেন, সাপাহারে অনেক ইউএনও এসেছেন, দায়িত্ব শেষে আবার চলে গেছেন। জবই বিলকে ভালোও বেসেছেন অনেকেই। হাতেগোনা কিছুসংখ্যক ইউএনও অমলিন হয়ে আছে আমাদের হৃদয়ে। তারা ব্যতিক্রম ও নান্দনিক উদ্যোগের মাধ্যমে সাপাহারের সুনাম উজ্জ্বল করেছেন। এমনই একজন বর্তমান ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন। তিনি জবই বিলকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপ দিতে ইতোমধ্যে কিছু নান্দনিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছেন। এতে করে জবই বিল আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

জবই বিল জীববৈচিত্র্য ও সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ বলেন, দেশি ও পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা বিধানে বন বিভাগের ভূতকুড়ি বিলকে সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। ইতোমধ্যে আমরা বন বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা হলে পাখির অভাধ বিচরণ, বংশবিস্তার, মা মাছ রক্ষা ও গবেষণা কাজ করা যাবে এবং পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

সাপাহার প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, বর্তমান ইউএনও দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত তার নন্দিত উদ্যোগগুলো সমাদৃত হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জবই বিলকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সেই লক্ষে কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করণ অন্যতম। ইউএনও’র সৃজনশীল ও নান্দনিক উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে জবই বিলের দৃশ্যপট। এছাড়াও সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত গতিশীল উপজেলা প্রশাসন বাস্তবায়নে জিরো টলারেন্স নীতি পালন করেছেন তিনি।

সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, জবই বিল কেন্দ্রিক পর্যটন আর্কষন বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন স্থাপনা ইতোমধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। এবং কিছু স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিলে পাখির অভয়ারণ্য তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে ঐতিহ্যবাহী জবই বিলের সুস্বাদু মাছ, পরিযায়ী পাখি এবং পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে সারা দেশে পরিচিতি পাবে এটাই আমার প্রত্যাশা।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ