আজ ২৩ ডিসেম্বর। ২০২১ সালের এই দিনে সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। ভয়াবহ সেই ট্রাজেডিতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিল শতাধিক। তাদের মধ্যে পাথরঘাটা উপজেলার ফজিলা আক্তার পপিও নিখোঁজ হয়। সেই ট্রাজেডির এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো পপির পথ চেয়ে বসে আছেন তার মা আমেনা বেগম।
ফজিলা আক্তার পপি পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের মো. আফজাল হোসেনের মেয়ে।
বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরদিন নিহতদের মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৪ জনকে বরগুনার ঢলুয়া ইউনিয়নে পোটকাখালীর গণকবরে দাফন করা হয়। এদের মধ্যে ডিএনএ টেস্টে তাদের ১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
পপির মা আমেনা বেগম জানান, পপি ঢাকার সাভার এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ঢাকায় ভালো কোনো স্কুলে লেখাপড়া করাবেন সেই স্বপ্ন নিয়ে অভিযান -১০ লঞ্চে বাবার বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লেগে নিখোঁজ হয়। ওই দিন রাত ৯টার দিকেও কথা বলেছেন তার মেয়ের সঙ্গে।
তিনি আরও বলেন, সন্তানহারা মা কিভাবে থাকে। সন্তানের অভাব কেউ পূরণ করতে পারে না। খুব কষ্টে দিন পার করছি। পপি লঞ্চে ওঠার সময় ফোন দিয়া বলছিল- মা ছুটি কম, রুটি পিঠা খাইতে মন চায়। যা খাওয়াবা জলদি খাওয়াবা। সকালে শুনি যে লঞ্চে আমার মেয়ে ছিল সেই লঞ্চেই আগুন লেগে পুড়ে গেছে। আর আমার মেয়ে আসলো না। রুটি পিঠাও খাওয়াতে পারলাম না।
পপির মা আরও জানান, এখন পর্যন্ত ডিএনএ রিপোর্টেও শনাক্ত হয়নি পপির মরদেহ। এ কারণে আমরা সরকারি সহায়তা পাইনি। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পপির মেয়ের লামইয়ার ভবিষ্যত। পপির মৃত্যুর সনদ না পাওয়ায় মেয়ের জন্য গচ্ছিত ডিপিএসের জমা টাকাও তুলতে পারছি না আমরা।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ