ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সোনারগাঁয়ে ছোট মাছের বড় বাজার

প্রকাশনার সময়: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৫৯

এক দিকে মেঘনার অথৈ জলরাশি, অন্য দিকে জেলেদের কোলাহল এ নিয়েই রোজ ভোরে ঘুম ভাঙ্গে মেঘনার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে গড়ে উঠেছে মিঠাপানির ছোট মাছের বাজার। বৈদ্যেরবাজার ফিশারিঘাট নামে পরিচিত এই ছোট মাছের বাজারে সারা বছরই লেগে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে এই বাজারে মাছ কেনাবেচা শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

শুক্রবার (২৩ই ডিসেম্বর) সকালে ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে পাইকার-মহাজনরা এসে ভিড় করেছেন। সেই সঙ্গে ঘাটে স্থানীয় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। নৌকায় করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে আসছেন জেলেরা। এসব মাছের ডাকে (নিলাম) ওঠাচ্ছেন পাইকারেরা। মাছ কিনে ট্রাকে বোঝাই করে পাইকারেরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বাজারে পাওয়া যায় মেঘনার সুস্বাদু সব মাছ। এর মধ্যে কই, শিং, টেংরা, পাবদা, মেনি, বাইলা, পোয়া, কাজলি, কাঁচকি, মলা, বজরি, বইছা, পুঁটি, টেকচাঁদা, দারকিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছের কদর এখন ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে অনেক বেশি। এসব ছোট মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, বোয়াল, চিতলসহ প্রচুর বড় মাছও বিক্রি হয়।

রাজধানীর ডেমরা থেকে আগত পাইকারি মাছ বিক্রেতা জসিমউদ্দিন বলেন, ‘মেঘনার তরতাজা ছোট মাছের কদর অনেক বেশি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ভোজনরসিক মানুষ আগে থেকেই এসব মাছের অর্ডার দেন। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতাদের চাহিদামতো বাসায় বাসায় আমরা এসব মাছ পৌঁছে দিই। এই মাছের স্বাদ যারা একবার নিয়েছেন, তারা ভুলতে পারেন না। এ জন্য বারবার অগ্রিম অর্ডার করেন।’

ঢাকার রামপুরা এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ও মামুন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার এই ঘাটে মাছ কিনতে আসি। দামে কম, তরতাজা ও সুস্বাদু হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের পছন্দের তালিকায় সব সময় শীর্ষে থাকে এখানকার ছোট মাছ।’

বন্দর লক্ষণখোলার রুবিনা বেগম বলেন, প্রতি সপ্তাহে তারা এ বাজার থেকে মাছ কেনেন। এসব মাছ ঢাকায় বসবাস করা আত্মীয় স্বজনের বাসায় পাঠান।

মাছ ব্যবসায়ী আশিক ও মোশাররফ বলেন, এই ঘাটে কুমিল্লার দাউদকান্দি, মেঘনা, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও সোনারগায়ের নুনেরটেক এলাকার জেলেরা মাছ বিক্রি করতে আসেন। প্রতিদিন এখানে গড়ে ২০ লাখ টাকার শুধু ছোট মাছ বিক্রি হয়।

সোনারগাঁও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জিয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘এ ঘাটের মাছের খ্যাতি এখন ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে প্রচুর তাজা মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে এখানকার ছোট মাছ নিয়ে আমরা এখন গর্ব করতে পারি। স্থানীয় জেলেদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছি।’

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ