আবারও বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় গাছখেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় রাস্তার পাশের মূল্যবান ৬টি সরকারি গাছ দিনের আলোতে নিজের মনে করে কেটে নিয়েছে গাছখেকোরা। গাছ কাটার নিয়ে ১৩ দিনেও কোনো কিনারা করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর তদন্ত শুরু হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাছ কিনা, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি। ফলে তারাও কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেনা।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, ফকিরহাট দিয়াবাড়ী রোডের জোড়া কবর ব্রাক অফিসের পাশ থেকে ৬টি সরকারি মূল্যবান গাছ কেটে নিয়েছে গাছখেকোরা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক দোকানি জানান, উৎকুল এলাকার বেল্লাল নামে এক লেবার সর্দার ১০-১৫ জন লেবার এই গাছগুলো কেটেছে। কার কথায় গাছ কাটছে জানতে চাইলে তারা বলেছে, নাজু ভাই টিএনও স্যারের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটছে। এ শুনে স্থানীয়রা ঝিমিয়ে যান। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার সুযোগে গাছখেকোরা শুক্রবার সকাল থেকে গাছ কাটা শুরু করে। শনিবার বিকেলের মধ্যে ৪টি গাছ নিয়ে যায় গাছখেকোরা।
সূত্র আরো জানায়, শনিবার বিকেলে বাগেরহাট সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ঘটনা স্থলে গিয়ে গাছ কাটা দেখে সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলীকে মুঠোফোনে জানালে রাতে ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনোয়ার হোসেন পুলিশ দিয়ে দুটি গাছের ৬ পিচ (লক) তার হেফাজতে নিয়ে নেয়।
এদিকে বাকি ৪টি গাছ কোথায় আছে, তার খোঁজ কেউ করেনি বলে জানান এলাকাবাসী। এলাকাবাসী আরো জানান, দুদিন দিনের আলোতে ১০-১৫ জন লোক প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে ৬টি গাছ কেটেছে প্রশাসন কিছুই জানেনা? গাছকাটা শেষ হলে রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলিশ দিয়ে দুটি গাছ হেফাজতে নিয়েছেন। বাকি ৪টি গাছের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে কি যেন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। কে যেন কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। প্রশাসনের কোনো এক অশুভ শক্তির কারণে গাছ খেকোরা বেঁচে যাচ্ছে বারবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, যেখান থেকে অজ্ঞাত গাছখেকোরা গাছ কেটেছে সেসব গাছের গোড়ায় তুলে ফেলে ইটের সলিং দিয়ে দিয়েছে। বোঝার উপায় নাই, সেখানে কোনদিন কোন গাছ ছিল।
শেখ সাহিদুজ্জামান নাজুর কাছে মুঠোফোনে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথার গাছ, আমি কোনো গাছ কাটার বিষয় জানিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনোয়ার হোসেন জানান, ৯ ডিসেম্বর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে বিষয়টি জানালে আমি সঙ্গে সঙ্গে ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আ. রহমানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলি। তিনি আমাকে বিকেলে বলেছিলেন, এখানে কোনো গাছ কাটা হচ্ছে না।
শনিবার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে রাতে পুলিশ নিয়ে দুটি গাছের ৬ পিচ জব্দ করে ইউপি সদস্য আ. রহমানের জিম্মায় রেখেছি। বর্তমানে গাছের লকগুলো উপজেলার হেফাজতে রয়েছে। বাকি ৪টি গাছের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, আগামী ২৭ ডিসেম্বর সরকারি গাছ কাটার বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন ফকিরহাট উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ