ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চারদিন পর ফেরত অপহৃতরা পুলিশ হেফাজতে

প্রকাশনার সময়: ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৩১

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ায় পাহাড়ি ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের’ হাত থেকে ফেরত আসা অপহৃত শিক্ষার্থীসহ আট বাংলাদেশিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) গভীর রাত ৩টায় অপহৃতরা চারদিন পর টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া এলাকায় নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর ভোর ৪ টায় তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে টেকনাফ মডেল থানার নিয়ে আসা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণ হওয়ার পর থেকে আমরা কয়েকটি পাহাড়ে ড্রোন উড়িয়ে অপহরণকারীদের শনাক্তসহ উদ্ধারের চিরনি অভিযান চালিয়েছি। তার প্রচেষ্টায় চাপে পরে অপহরণকারী তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। আমরা ফেরত আসা অপহৃতদের চিকিৎসা শেষে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এর পেছনে যারাই জড়িত থাকুক কেউ রেহাই পাবে না।’

ফেরত আসা অপহৃতরা হলেন, জাহাজপুরা এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহামদের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ, একই এলাকার ছৈয়দ আমিরের ছেলে মোস্তফা কামাল, মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. রিদুয়ান, রুস্তম আলীর ছেলে সেলিম উল্লাহ, ছৈয়দ আমিরের ছেলে করিম উল্লাহ, কাদের হোসনের ছেলে নুরুল হক ও নুর মোহাম্মদ এবং রশিদ আহমদের ছেলে আবছার।

বৃহস্পতিবার সকালে থানা প্রাঙ্গনে অপহৃতর ভাই মো. উল্লাহ জানান, ‘চারদিন পর অপহরণকারীরা আমার ভাইসহ ৮ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। রাত ৩টায় আমরা তাদের জাহাজপুরা বনিছড়া খাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করি। তাদের সবাইকে নির্মমভাবে মারধর করেছে অপহরণকারীরা। আর একদিন হলে হয়তো আমার ভাই মারা যেতো। আমার ভাইসহ সবাইকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।’

ফেরত আসা ভাইয়ের বরাত দিয়ে মো. উল্লাহ বলেন, ‘পুলিশের অভিযানের মুখে পরে ভয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে। গতকাল পাহাড়ে অভিযানের সময় তারা (অপহৃতরা) পুলিশের দলকে দেখতে পায়, কিন্তু মুখে কাপড় বাঁধার কারণে চিৎকার করতে পারেনি। তবে অভিযানিক দলকে দেখে অপহরণকারী তাদের অস্ত্র তাক করেছিল। আর একটু সামনে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের সবাইকে মেরে হয়তো পালিয়ে যেতো। গত চারদিন তাদের সবাইকে খুব বেশি অত্যাচারের কথাও বর্ননা দেন।’

মো. রিদুয়ানের বাবা মমতাজ মিয়া বলেন, ‘গভীর রাত ৩ টায় ছেলে ফিরে এসেছে। কিন্তু তার শরীরের ব্যাপক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভোরে পুলিশ এসে ছেলেকে নিয়ে গেছে। আমরা সাবাই অনেক খুশি তাদের ফিরে পেয়েছি।’

বাহারছড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ অপহৃত আটজন ফিরে এসেছে। হয়তো পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের চাপের মুখে পরে ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা’ তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এর আগে অপহরণের পর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল তারা।’

এর আগে গত রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ঘেঁষা খালে মাছ ধরতে গেলে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের একটি দল ওই ৮ জনকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। সেসময় স্বজনরা ৬ লাখ টাকা দিয়ে তাদের ছেড়ে আনতে তৎপরতাও চালিয়েছিল। পরে খবর পেয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ে ড্রোনসহ চিরনী অভিযান শুরু করে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ