ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শ্রমিক নয়, খননযন্ত্রে চলছে প্রকল্পের কাজ

প্রকাশনার সময়: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৫৮

বরগুনার তালতলীতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে (ইজিপিপি) প্রকল্পের অধীনে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার ৭০০ ফুট গ্রামীণ রাস্তা শ্রমিকদের না দিয়ে করা হচ্ছে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর-বেকু) দিয়ে। নির্মাণের এ কাজে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকরাও কাজের এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, কর্মহীন মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে প্রতি বছর সরকার শ্রমিকদের দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করিয়ে অর্থ দিয়ে থাকে। সরকারিভাবে এই প্রকল্পকে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) নাম দিলেও স্থানীয়ভাবে এটি ৪০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মরানিদ্রা স্লুইজের উত্তর পাড় হইতে আলমগীরের বাড়ি পর্যন্ত ১টি মাটির রাস্তা নির্মাণের জন্য ৪৫ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাগজে-কলমে শ্রমিক থাকলেও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই।

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের দিয়ে একটি সড়ক নির্মাণ করার কথা। সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে খননযন্ত্র (বেকু) দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এতে শ্রমিকরা যেমন কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি সড়কের পাশে থাকা বসবাসকারী মানুষের গাছপালাসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। অন্যদিকে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি চলমান থাকার সময় নিয়মিত তদারকির দায়িত্বে ট্যাগ অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার গৌতম চন্দ্র বসু থাকলেও বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও চোখে পড়েনি।

প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য জামাল খান বলেন, রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ৭শ ফুট। এই রাস্তাটি নির্মাণে অনেক ব্যয়বহুল। রাস্তাটি অনেক উঁচু করে করতে হচ্ছে। প্রতিদিন ৪শ টাকা করে ৪৫ জন শ্রমিক দিয়ে রাস্তাটি করার কথা ছিল। তবে এই টাকায় বর্তমানে কোনো শ্রমিক কাজ করতে চান না। এ কারণে খননযন্ত্র দিয়ে রাস্তা নির্মাণকাজ করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া বলেন, প্রথমে আমি শ্রমিক দিয়ে উদ্বোধন করেছি পরে কিছু কাজ বেকু মেশিন দিয়ে কাজ করানো হয়েছে।

কর্মসংস্থান কর্মসূচি তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার গৌতম চন্দ্র বসু বলেন, আমি শুধুমাত্র শ্রমিকের তালিকায় স্বাক্ষর করেছি। তাছাড়া কাজ কখন শুরু হয়েছে, এটা আমাকে ওই ইউনিয়ন পরিষদের কেউ জানান নি।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুনু বেগম বলেন, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকের পরিবর্তে খননযন্ত্রের ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। যদি খননযন্ত্র ব্যবহার করা হলে ওই কাজের বিল দেওয়া হবে না। এছাড়া এবার শ্রমিকদের নামে নামে অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম সাদিক তানভীর বলেন, শ্রমিকদের পরিবর্তে বেকু মেশিন দিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়াশতাব্দী/এফআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ