ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পিঠা বেচে চলে শতাধিক পরিবার 

প্রকাশনার সময়: ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:৪১

পৌষের শুরুতেই প্রকৃতিতে শীত আসে। শীতের সঙ্গে আসে বাহারি পিঠার আয়োজন। ঈশ্বদীর পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে গড়ে উঠেছে শীতকালীন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। প্রতিদিন বিকাল থেকে এসব দোকানে পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছে মানুষ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় ক্রেতার সমাগম, যা মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে। এমন হীম-শীতল পরিবেশে গরম পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। অনেকে পরিবার নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন পিঠার দোকানে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, গরম গরম ভাপা পিঠা নামছে মাটির চুলা থেকে। ক্রেতারা সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। কোনো চুলায় ভাপা পিঠা, কোনোটিতে চিতই, কোনোটিতে ডিম বা অন্য কোনো পিঠা। শীত যতই বাড়ছে এসব পিঠাপুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। দোকানগুলোয় পিঠার পাশাপাশি থাকছে হরেক রকম ভর্তা। রসুন-মরিচবাটা, ধনিয়াপাতা বাটা, শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তাসহ নানা রকম উপকরণ মিলিয়ে তৈরি হয় এসব ভর্তা।

ভাপা আর চিতই পিঠার কদর বেশি। প্রতিটি বিক্রি হয় পাঁচ থেকে ১০ টাকায়। এছাড়া অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা পিঠার দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পুলি, ভাপা, তেলের পিঠা, কালাই রুটি, পাটিসাপটাসহ হরেক রকম পিঠা।

ঈশ্বরদী পৌর এলাকার পিঠা বিক্রেতা খাজা মিয়া বলেন, বছরের এই সময়টা পিঠার বিক্রি বেশি হয়। বর্তমানে চিতই, ভাপা , পাটিসাপটাসহ পাঁচ থেকে সাত ধরনের পিঠা তৈরি করছি আমি। আর চিতই ও ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারকেল, খেজুরের গুড়সহ বাহারি পদের ভর্তা। ভালোই লাভ হচ্ছে।

সেখানে গরম চিতই পিঠার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ রায়হান জানান, শীতে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার যে ছবি আমাদের চোখে ভেসে উঠে, নগর জীবনে তার দেখা মিলবে কই। এরা আছে বলে একটু পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়। বিক্রেতারা পিঠা তৈরি করছেন আর ক্রেতারা দাঁড়িয়ে বা বসে গরম পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন; এ যেন শীতের আরেক ধরনের আমেজ।

আরেক পিঠা বিক্রেতারা মিজানুর বলেন, আমরা চালের গুঁড়া, ভর্তা আর প্লাস্টিকের পিরিচ সাজিয়ে দোকান খুলি। পরে ভাপা-চিতুয়া ও অন্যান্য পিঠা বানিয়ে হটপটে ঢুকিয়ে রাখি। এরই মধ্যেই ক্রেতার ভিড় জমে গেলে সেখান থেকে বের করে তাদের সামনে পরিবেশন করি। পাশাপাশি সিদ্ধ ডিম, ডিম চিতুয়া ইত্যাদিও চলে বেশি।ৎ

ক্রেতা বাসিদুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলার একটা সুখকর স্মৃতি হচ্ছে, শীতের সকালে চুলার পাশে বসে ঝোলা গুড় মিশিয়ে চিতই পিঠা খাওয়া। বর্তমানে পিঠার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ভর্তা। এসব মুখরোচক খাবার হাতের কাছে পেয়ে ভালো লাগে।

পিঠা বিক্রেতা আলেয়া বেগম জানান, এবার শীত শুরু হাওয়ার আগেই প্রচুর পিঠা বিক্রি হচ্ছে। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয়। তবে রাতে পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই আয়ও এবার একটু বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকা পিঠা বিক্রি করি ।

ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোড় ও পাড়া-মহল্লায় স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছেন পিঠার দোকান। শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে গেইট, পৌর সুপার মার্কেটের সামনে, পোস্ট অফিসের সামনে, কলেজ মোড়, বিভিন্ন হাটের রাস্তা বা এলাকায় এসব পিঠার দোকান বসেছে।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ