নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া হায়দার আলী সবুজ ওরফে হাইডুর (২০) জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় বাঁশগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা শেষ হয়।
এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ।
এর আগে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাঁশগাড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক সমর্থকদের ওপর। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
নিহত হায়দার আলী সবুজ ওরফে হাইডু ওই ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি এলাকার মো. হানিফ মিয়ার ছেলে এবং পেশায় ব্যাটারীচালিত অটোরিকশাচালক ও সিরিয়াল ম্যান।
সোমবার সরেজমিনে গেলে নিহতের বাবা হানিফ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, রোববার বিকেলে আশরাফুলের লোকজন হায়দারকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। তার বুকে একটি গুলি আমরা দেখেছি৷ এরকম আরও কোনো গুলি আছে কি না তা দেখিনি। তবে জেনেছি, তাকে কয়েকজনে ধরে গুলি করে অস্ত্র দিয়ে মুখে আঘাত করে হত্যা করেছে।
নিহতের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম বলেন, হায়দার সিএনজি স্ট্যান্ডে কাজ করতো। তাকে ডেকে নিয়ে ধরে গুলি করেছে। তারপর তার মুখে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। পরে তার নিথর দেহ টেনে হিঁচড়ে নিচ থেকে উপরে তুলে আনা হয়। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রায়পুরা তুলাতুলি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যকার বিরোধ মিটমাট করে দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও প্রশাসন। ওই মিটিংয়ে দুই গ্রুপের প্রধান বাঁশগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রাতুন হাসান ও সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক সংঘর্ষে আর না জড়ানোর ঘোষণা দেন। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন মির্জাচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক। এর আগেও একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়ে বাঁশগাড়ি ইউপির সাবেক চেয়াম্যান সিরাজুল হকসহ উভয় পক্ষের অনেক প্রাণহানি ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট হয়েছে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নয়াশতাব্দী/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ