সদ্য শূন্য হওয়া ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রাণীশংকৈল) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কাস পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ৮ জন নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪ জন। দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন তারা। দলের হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করতে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েক জন নেতা ঢাকায় গিয়ে অবস্থান করছেন। পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন অনেকে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে হাট বাজার, চায়ের দোকান, রাস্তার মোড় সহ বিভিন্ন জনবহুল স্থানে চলছে আলাপ-আলোচনা।
স্বাধীনতার পর থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনে আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইমদাদুল হককে হারিয়ে সেবার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহমেদ এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৩ বছর এ আসনে সংসংদ সদস্য ছিলেন হাফিজ উদ্দীন। ২০১৪ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থনে হাফিজ উদ্দীনকে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হন ১৪ দলের শরিক দল ওয়ার্কাস পার্টি অধ্যাপক ইয়াসিন আলী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অধ্যাপক ইয়াসিন আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। এ সময় মটর গাড়ি মার্কা নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক। লাঙ্গল মার্কা নিয়ে লড়েন জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দীন আহমেদ আর ধানের শীষ মার্কা নিয়ে ভোট করেন জাহিদুর রহমান। সিংহ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায়। পরে প্রশাসনের চাপে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ায় গোপাল। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আর জোট-মহাজোটের কোন্দলের কারণে সেবারের নির্বাচনে এ আসনে পরাজিত হয় নৌকা। এমপি নির্বাচিত হন বিএনপি’র জাহিদুর রহমান জাহিদ।
সম্প্রতি জাহিদুর রহমান সহ বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে শূন্য ঘোষণা করা হয় এ আসন সহ ৬টি আসন। আসন গুলোতে শীঘ্রই উপ-নির্বাচন হবে- নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণায় নড়ে চড়ে বসেছেন এ আসনের আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কাস পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে তারা লবিং শুরু করেছেন দলের উর্দ্ধতন নেতাদের সাথে। সেই সাথে এলাকায় চালাচ্ছেন গণসংযোগও। আওয়ামী লীগ থেকে পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সেলিনা জাহান লিটা, পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব আখতারুল ইসলাম, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব, পীরগঞ্জ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায় দলীয় মনোনয় পেতে কাজ করছেন।
দলের হাইকমান্ডের সাথে কথা বলতে এরই মধ্যে ঢাকায় গেছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। অন্যরাও ঢাকায় যাবেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে জাতীয় পার্টি থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি হাফিজউদ্দীন আহমেদ এ উপ-নির্বাচনে অংশ নিবেন বলে জানান। এরজন্য তাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিও রয়েছে বলে জানান দলের স্থানীয় নেতারা।
অপর দিকে ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক ইয়াসিন আলীও এ উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তিনিও কাজ করছেন তৃণমূলে। এখন দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা আছেন।
এছাড়াও জাসদ (ইনু) থেকে এ আসনে উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে চান সিনিয়র সাংবাদিক দীপেন্দ্র নাথ রায়। সব মিলিয়ে এ আসনে উপ-নির্বাচনের হাওয়া বেশ জোরে সরেই বইতে শুরু করেছে।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ