আব্দুল খালেক সাহেব তালম ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা। তিনি ২০২১ সালে একটি স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি এলাকাবাসীর বিশুদ্ধ পানির সমস্যা দূর করার জন্য ২৫টি নলকূপ স্থাপন, রাস্তাঘাট সংস্কার ও নির্মাণ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে এলাকায় একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন।
এটি সিরাজগঞ্জের তাড়াশের রানীরহাট বাজার দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় (সৃজনশীল) প্রশ্নপত্রের ১ নং ক্রমিকের উদ্দিপক। যা পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হবে এমনই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে তালম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে নিয়ে তেলবাজি করেছেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিন।
যেমন:- উপরের অংশ পড়ে নিচের উদ্দিপক প্রশ্ন গুলোর উত্তর লিখতে বলা হয়েছে। আর প্রশ্ন গুলো ছিল
(ক) বাংলাদেশে জেলা পরিষদের সংখ্যা কত?
(খ) জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস-ব্যাখা কর।
(গ) আব্দুল খালেক সাহেব কোন ধরনের স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন? ব্যাখা কর।
(ঘ) আব্দুল খালেক সাহেবকে চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লিখিত দায়িত্ব ছাড়াও আরও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়- বক্তব্যটির যথার্থতা নিরুপন কর।এ দিকে এলাকাবাসী ও এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের এক নম্বরে চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে নিয়ে উদ্দিপক প্রশ্ন করায়। যা নিয়ে এলাকায় তোলপার শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শেখাবেন না চেয়ারম্যানের তেলবাজি করবেন।
আসমত আলী নামের এক অভিভাবক ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, বাংলাদেশে অনেক বিখ্যাত মানুষ রয়েছেন। যারা দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন এবং করছেন, তাদের নাম দিলে শিক্ষামূলক হতো। যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষণীয় বিষয়ও হতে পারতো। কিন্তু তা না করে তেলবাজির প্রশ্ন করছেন। এছাড়া উদ্দিপক ওই প্রশ্নের উপরের লেখাটি ও ভুলে ভরা। আসলে আমরা বুঝতে পারছি না ওই প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কি বুঝাতে চাচ্ছেন।
কলামুলা গ্রামের আরেক অভিভাবক আব্দুল হালিম বলেন, এ ধরনের প্রশ্নপত্র করে শিক্ষার্থীদের দেউলিয়া বানাচ্ছেন শিক্ষকরা। এ ধরনের প্রশ্ন করা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস এম সোহেল রানা বলেন, আমি ১৬ ডিসেম্বর শিক্ষকদের জরুরি সভা ডেকেছি। সেখানে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন বলেন, প্রশ্নটি বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক হোসেন আলী মণ্ডল করেছেন। যা তেলবাজি বললে বেশি বলা হবে না। তবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ ধরনের প্রশ্ন প্রণয়ন করা আপনার দায়িত্বে অবহেলা কি না এ প্রশ্ন করলে তিনি পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন।
অবশ্য, প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী খণ্ডকালীন শিক্ষক হোসেন আলী মণ্ডল বলেন, আমি না হয় ভুল করেছি। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি দেখলেন না?
বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যে জানার জন্য তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ