চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় গরুর দড়ি ও খুঁটি নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই সহোদর ভাই। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৪ প্রতিবেশী। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম খুরুশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- জহির আহাম্মদের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮) এবং তার ছোট ভাই কামাল হোসেন (২৫)। আহত হয়েছেন তাদের প্রতিবেশী মো. ইদ্রিছ এবং তার তিন ছেলে মো. বাদশা, সালাউদ্দিন ও মো. রানা।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পিতা-পুত্র শফিকুল ইসলাম (৬২) ও খোরশেদকে (২৮) আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। তবে অপর দুই ঘাতক মোরশেদ (২৩) ও সাইফুল (৩৫) পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় দোকানদার নুরুল কবির জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে জালাল তার গৃহপালিত পশুকে মাঠে ঘাস খেতে বেঁধে দিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর গিয়ে দেখেন, তার গরুর গলার দড়ি খুলে নিয়ে গেছে। খুঁজতে গিয়ে খুঁটিসহ দড়িটি ঘাতক শফিকুল ইসলামের হাতে দেখতে পান। এই নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হলে শফিকুলের মাথায় আঘাত লেগে ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেন। এর জেরে একই দিন বিকেলে শফিকুল ইসলামের তিন ছেলে খোরশেদ, মোরশেদ ও সাইফুল নিহত জালাল উদ্দিনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাঁকে বাঁচাতে ভাই কামালসহ প্রতিবেশী ইদ্রিছ ও তাঁর তিন সন্তানরা এগিয়ে আসেন। এ সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান দুই ভাই জালাল ও কামাল। গুরুতর আহত হন প্রতিবেশী ইদ্রিছসহ তাঁর তিন ছেলে। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেপে নিয়ে আসেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেপের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাহেরাতুল আশরাফী বলেন, আহতের হাসপাতালে আনার পর দু’জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ইদ্রিছের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক পিতা ও পুত্রকে আটক করা হয়েছে। পলাতক দু’জনকে ধরতে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ