ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অদম্য নারী উদ্যোক্তা রুকাইয়া ইসমাত

প্রকাশনার সময়: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:০৭ | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:১৪

রুকাইয়া ইসমাত। একজন ফ্যাশন উদ্যোক্তা, সমাজকর্মী ও সাংবাদিক। ক্যারিয়ারের শুরুতেই ইচ্ছা ছিলো একজন সফল উদ্যোক্তা হবেন। সেই ইচ্ছাশক্তিকে পুঁজি করেই ২০১৯ সালে নিজ নামেই ফ্যাশন হাউজ গড়ে তোলেন রুকাইয়া ইসমাত। শুরুটা ভালই চলছিল কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময় সারাদেশ ‘লকডাউনে’ চলে গেলে অন্য অনেক উদ্যোক্তার মতো বিপাকে পড়েন তিনিও। তবে হাল ছেড়ে দেননি। মনোবল ধরে রেখে সেই কঠিন সময় পার করেছেন। সেই প্যানডেমিক মোকাবিলা করে টিকে থাকার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। এ বছরের ন্যাশনাল ইয়ুথ ক্যারিয়ার কার্নিভালে সফল ফ্যাশান উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন রুকাইয়া।

দেশীয় জামদানি ও তাঁতের শাড়ি দিয়ে ফ্যাশন হাউজ ‘রুকাইয়া ইসমাত’ সাজানোর পরিকল্পনা ছিল তার। ঐতিহ্যবাহী দেশীয় এসব পোশাকের সঙ্গে তিনি যুক্ত করতে চেয়েছিলেন আধুনিক নকশার ছাপ। সে অনুযায়ীই শুরু করেন কাজ। তৈরি করতে থাকেন নিজস্ব নান্দনিক নকশার পোশাক। প্রশংসাও পেতে থাকেন। রুকাইয়া জানান, ফ্যাশন হাউজ চালুর মাত্র ছয় মাসের মাথায় করোনা সংক্রমণের কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বেচাবিক্রিও তখন বন্ধ। নিজস্ব পণ্য তৈরি করতে কয়েকটি কারখানার সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। করোনার থাবায় সে কাজও থমকে যায়। বলতে গেলে নেমে আসে স্থবিরতা।

সেই কঠিন সময় পাড়ি দেওয়ার কথা জানিয়ে রুকাইয়া বলেন, চারপাশে তখন বিপদ। তবে দিশেহারা না হয়ে বিক্রি হবে না জেনেও কিছু তাঁতিকে নিজের পুঁজির টাকা দিয়ে কাজ চলমান রাখি। কিছু কিছু পণ্য তৈরি করে মজুত করতে থাকি। এর মাধ্যমে অন্তত তাঁতিদের আমার নিজস্ব পণ্য তৈরির জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়। আর সেই সাহসী পদক্ষেপের ফল পেতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।

রুকাইয়া জানান, ঈদের সময় থেকে অনলাইনে কিছু পণ্য বিক্রি হয়। সেই শুরু। এরপর ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়তে থাকে। আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি ‘রুকাইয়া ইসমাত’ ফ্যাশন হাউজকে। এখন আধুনিক নকশায় তৈরি করা নিজস্ব সব দেশীয় পণ্য নিয়ে এই ফ্যাশন হাউজটি প্রতিষ্ঠিত। আর সে কারণেই এ বছরের ন্যাশনাল ইয়ুথ ক্যারিয়ার কার্নিভালে ফ্যাশন উদ্যোক্তার পুরস্কারও রুকাইয়া ঝুলিতে পুরেছেন।

রুকাইয়ার সমাজকর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ের কথা বলা হয়েছে আগেই। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সেই পেশায় থেকেও কাজ করছেন। এরই মধ্যে নিজেকে দক্ষ যুব নারী নেতৃত্বের জায়গাতেও নিয়ে গেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন দেশের আর্থ-সামাজিক অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ প্রভাব বিস্তারের জন্য দক্ষ নারী শ্রম তৈরি করার। অরক্ষিত গ্রামীণ মহিলাদের উপর আরও ভাল ভবিষ্যত সুযোগ উপার্জনের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীলতা বিকাশ করা। এবং একসাথে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সচেতনতামূলক কর্মসূচিকে একীভূত করে উপজাতি নারী সমাজকে উৎসাহিত করা। তার চাওয়া, তার মতোই অন্য নারীরাও যার যার জায়গা থেকে সম্ভাব্য খাতগুলোতে উদ্যোক্তা বা পেশাজীবী পরিচয় দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।

এ বছরের ন্যাশনাল ইয়ুথ ক্যারিয়ার কার্নিভালে ৪০ জন সফল উদ্যোক্তার মধ্যে ফ্যাশন উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন রুকাইয়া ইসমাত।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ