রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপির মধ্য সংঘর্ষ চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে দফায় দফয় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এসময় একটি ককটেল বিস্ফোরণ শব্দ শোনা যায়।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩ ঘটিকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাচলাকালে পুলিশ রাস্তা থেকে সরে যেতে বললে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ ও টিয়ালশেল নিক্ষেপ করে।
তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে পুলিশ বা বিএনপির কারো বক্তব্য জানা যায়নি।
১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঘিরে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে গত কয়েকদিন ধরেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নয়াপল্টন কার্যালয়ে প্রবেশের দুপাশে ফকিরাপুল ও নাইটেঙ্গেল মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি রাখা হয়েছে সাজোয়া যান ও জলকামান।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে সাংগঠনিক বিভাগগুলোতে ধারবাহিকভাবে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দলটি তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে এ গণসমাবেশ করতে চায়। এ জন্য গত ১৫ নভেম্বর সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর চিঠিও দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির গণসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশ বিএনপিকে ২৬ শর্তে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।
তবে সেখানে বিএনপি সমাবেশ করতে নারাজ। প্রথম দিকে তারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানান। পরে অবশ্য সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প স্থানে অনুমতি পেলে ‘বিবেচনা’ করার কথা জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি ‘বিকল্প স্থান’ চাওয়ার পর পুলিশ টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ও পূর্বাচলে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে গ্রিন সিগন্যাল দেয়। তাতে সাড়া দেয়নি বিএনপি। ফলে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের স্থান নিয়ে এখনো কাটেনি অনিশ্চয়তা।
এদিকে বুধবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, নয়াপল্টনেই হবে বিভাগীয় সমাবেশ। যদি গ্রহণযোগ্য বিকল্প প্রস্তাব দেয়া হয়, আমরা ভেবে দেখব।
অন্যদিকে বুধবার দুপুরে রাজধানীর বিজয় সরণিতে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড এর শাখা উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রাস্তাঘাট বন্ধ করে বিএনপি সমাবেশ করলে, আইন রক্ষায় যা করার সরকার তাই করবে।
তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর রাস্তাঘাট বন্ধ করে বিএনপি সমাবেশ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে সমাবেশের নামে ঢাকায় কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে বিএনপি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তবে বিএনপি বরাবর বলে আসছে, তারা অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো ঢাকায়ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ