পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছিল, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে ঠিক একইভাবে অত্যাচার করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘আমরাই দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করি। কিন্তু বিএনপি কী করে? তারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে কত মেয়েকে নির্যাতন করেছে? বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই তারা অত্যাচার করেনি।’
শনিবার (২৬ নভেম্বর) মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৩টার দিকে এ সম্মেলনে পৌঁছান আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
নারীদের অধিকার নিয়ে বঙ্গবন্ধু সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তাই বর্তমান সরকারও নারীদের অধিকার উন্নয়নে কাজ করে চলেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি উচ্চারণ করে বলেন: ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ সুতরাং রাষ্ট্রের সব জায়গায় নারীদের কাজের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সর্বক্ষেত্রে নারীদের কাজের অগ্রাধিকার করে দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় তারা নারীদের রাস্তায় ফেলে তাদের ওপর নির্যাতন করেছে। কিন্তু এখন তাদের মেয়েরা রাস্তায় নেমে মিছিল মিটিং করছে, কই তাদের তো আমরা নির্যাতন করছি না। তারা তো স্বাধীনভাবে সমাবেশ-মিছিল করতে পারছেন। তাই দেশের মানুষ বিএনপির মতো অপরাধী দলকে সমর্থন করে না।
এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে বলেন, অসহায় নারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাতা, বিধবা ভাতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্যসেবার দিকেও নজর দেয়া হচ্ছে। নারীদের সব ধরনের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করছে বর্তমান সরকার।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে। শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন ও শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে শাপলা চত্বর পর্যন্ত ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
সম্মেলন কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা নিজেদের অনুসারীদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করে শক্তি প্রদর্শন করে আসছিলেন।
এর আগে সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মহিলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রোজিনা নাসরিন বলেন, ‘আজ (শনিবার) আমাদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সারা দেশ থেকে আমাদের সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মেলন কেন্দ্র করে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। আগামী নেতৃত্বে কারা আসবে–সেই বিষয়েও নেতাকর্মীদের মাঝে অনেক আগ্রহ রয়েছে, আমি তার বাইরে নই।’
এর আগে ২০১৭ সালের ৪ মার্চ মহিলা আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পরপর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় পাঁচ বছর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ