ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নেতা যান নেতা আসেন কমিটির দেখা মেলে না

প্রকাশনার সময়: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০০:৪২

ছয় বছর আগে ২০১৬-এর ১৭ নভেম্বর ৩ মাসের জন্য ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ হিসাবে গত ১৭ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির ৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। একই অবস্থা সরকারি বাঙলা কলেজের। বাঙলা কলেজের সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর কমিটি হয়েছিল। তখন ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম ১ বছরের জন্য মুজিবুর রহমান অনিককে সভাপতি ও সোলায়মান মিয়া জীবনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি অনুমোদন দেন। এরপর ২০১৬ সালে সাইফুর রহমান সোহাগ ও এসএম জাকির হোসেন বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২১ মার্চ মাস তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এরপর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগ আর নতুন নেতৃত্ব পায়নি। এ হিসাবে প্রায় ৮ বছর আগে ১ বছর মেয়াদে হয়েছিল বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি। এরপর একে একে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে ৩ বার। আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো পরিবর্তন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের ‘স্বাক্ষর ক্ষমতা বন্ধ’ হয়ে যাওয়ায় তারা আর নতুন করে কোন কমিটি অনুমোদন দিতে পারবেন না। এ কারণে এবারও ভাগ্য খুলছে না বাঙলা কলেজ কিংবা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ কর্মীদের।

জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান নয়া শতাব্দীকে বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় সংগঠনের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। যার উদাহরণ সমপ্রতি নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের সংঘর্ষ। যেখানে ২টা মার্ডার হয়েছে। কমিটি থাকলে কলেজ নিয়ন্ত্রণে থাকত, এই ধরনের সংঘর্ষ ঘটত না। নেতৃবৃন্দ বিষয়টা প্রথমেই মিটমাট করতে পারত।

জানতে চাইলে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান অনিক নয়া শতাব্দীকে বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ২ বছর আর জেলা ও জেলা সমমনা ইউনিটের মেয়াদ ১ বছর। সাধারণত ২ বছরের পরিবর্তে ৪ বছর থাকে আর বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি তো আছে ৫ বছর ধরে। সে জায়গায় আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি একটা অনুরাধ করব, নেত্রী যেন ৩০তম সম্মেলনে নেতা নির্বাচন করার আগে তাদের একবার জিগ্যেস করেন যে, তাদের কত বছর দিলে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সব ইউনিটের কমিটিগুলো দিতে পারবে।

তবে কমিটি না থাকলে সংগঠনের গতিশীলতা বন্ধ হয়ে যায় বলে মনে করেন বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন পলাশ। নয়া শতাব্দীকে পলাশ বলেন,' কমিটি ছাড়া তো কোন সংগঠন চলতে পারে না। সংগঠনের গতি মন্থর হয়ে যায়। কমিটি থাকলে রাজনীতির চর্চা হয়, নেতৃত্ব থাকে, যেকোন যায়গায় গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যায়।

এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘আরো ৮ বছর আগে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছিল। এরপর আরো ৮ টা ব্যাচ নেতৃত্ব দেয়ার মতো গড়ে উঠেছে। এখন নেতৃত্ব জটের কারণে তারা হতাশায় ভুগছে, রাজনৈতিক সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না, জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আবার ওইদিকে চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সঠিক চর্চার জন্য ছাত্রলীগের কমটি অত্যন্ত জরুরি।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ