মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি, যা বলছে ডিএমপি

প্রকাশনার সময়: ১৫ নভেম্বর ২০২২, ১৮:০৭

আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে লিখিতভাবে অনুমতিও চাওয়া হয়েছে।

নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চাওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, ঢাকার বাইরের বিভাগীয় সমাবেশগুলোর আগে গণপরিবহন বন্ধ করাসহ দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ধরপাকড় চালিয়েছে সরকারি দল। পথে পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতেই দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বিএনপির দরখাস্ত পেলেও এখনো অনুমতি দেয়নি। গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণের পর অনুমতির বিষয়টি জানানো হবে। তবে সেটি কবে নাগাদ জানানো হতে পারে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে গিয়ে নয়াপল্টনে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ করার অনুমতি চায় বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। ডিএমপি কমিশনার বরাবর বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে লিখিত দরখাস্তও দেওয়া হয়।

এসময় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম, প্রচার সম্পাদক ও বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সদস্যসচিব আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যের ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ অনুমতি দেওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

ফারুক হোসেন বলেন, আমরা লিখিত দরখাস্ত পেয়েছি, এখন সেটি বিবেচনা করে দেখবো অনুমতি দেওয়া যায় কি না। আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে তাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখবো কোনো ধরনের ঝুঁকি রয়েছে কি না।

এদিকে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় থেকে বের হয়ে আমানউল্লাহ আমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আমাদের দপ্তর থেকে চিঠি দিয়েছি। আমরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছি। এখানে আমরা আগেও সমাবেশ করেছি। আমরা বলেছি, সমাবেশটি হবে শান্তিপূর্ণ।

তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন, আগের সমাবেশগুলোর আগে সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমরা বলেছি, ঢাকায় সমাবেশের আগে এবাবে গণপরিবহন বন্ধ করা যাবে না। এ বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছি। আমরা বলেছি, সমাবেশে যারা আসবে তারা যেন কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়। তাদের ওপর যেন কোনো ধরনের আক্রমণ করা না হয়।

এসময় তিনি ডিএমপি কমিশনারের কাছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের বিষয়টিও তুলে ধরেন বলে জানান।

তবে ধরপাকড় বিষয়ে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এরকম কাউকে গ্রেফতার করিনি। যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই তাদের বিরুদ্ধে এরকম কোনো গ্রেফতার অভিযানও চলছে না। তবে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা আছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসবো, তাদের গ্রেফতার করবো।

নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম বলেছেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সমাবেশের জন্য বিকল্প কোনো ভেন্যুর প্রস্তাব আমাদের আছে কি না। আমরা বলেছি, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানাবো। তবে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনুমতি চেয়েছি।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল বিএনপির সমাবেশ ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করছে, বাধা সৃষ্টি করছে। তাই নয়াপল্টনে সমাবেশ করলে সরকারি দল তেমন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবে না।

জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সাম্প্রতিক সময়ে দলের একাধিক নেতাকর্মীকে হত্যার প্রতিবাদ এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করছে বিএনপি। এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুরে সমাবেশ করেছে দলটি। আগামী ১৯ নভেম্বর সিলেটে এবং ৩ ডিসেম্বর বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ