ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এইট পাস, মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে, উন্নয়ন হয় না : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ১১ নভেম্বর ২০২২, ১৯:০২

এইট পাস দিয়ে আর মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে, সেই দেশের উন্নতি হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বলেন, ‘সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হলেও বাংলাদেশে হবে না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আরও এগিয়ে যাব, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যারা বলছে- বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, তাদের মুখে ছাই পড়েছে।’

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে আওয়ামী যুবলীগের মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার আগে সরকারে ছিল বিএনপি। ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল বিএনপির সময়। আমরা ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত নিয়েছিলাম। কোভিড টিকা কিনেছি, বিনিয়োগ করেছি, বিমান কিনেছি, পায়রা বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। এভাবে রিজার্ভ থেকে খরচ হয়েছে। ঘরের টাকা ঘরে থাকছে। দেশের জনগণের উন্নয়নে এই টাকা ব্যবহার করছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের নেতাই বিভিন্ন মামলার আসামি, তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না। আমাদের অনেক সমালোচনা করছে অনেকে। তারা নাকি উন্নয়ন চোখে দেখে না। এই যে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এগুলো কে করেছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭১’এ যেই জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, বিএনপি সেই জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। আজকে আবার সেই জয় বাংলা ফিরে এসেছে। তারা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল। যেই ভাষণ পরবর্তীতে ইউনেস্কো বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরনির্ভরশীল থাকলে চলবে না, আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। তাই আমি আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।’

করোনার সময়, গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়া সংক্রান্ত সরকারের প্রকল্পে, কৃষকের ধান কেটে দিয়ে, বিভিন্ন সময়ে দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি যুবলীগের প্রত্যক নেতাকর্মীকে তিনি ধন্যবাদ জানান। তাদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংকশানের কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলবো নিজের গ্রামে যান, নিজের জমি চাষ করবেন। অন্যের জমিতে যাতে উৎপাদন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যে কোনও চাষ, সবজি, গাছপালা লাগাতে হবে। সন্ত্রাস রুখতে হবে।

সবসময় মানুষের পাশে থাকতে নেতাকর্মীদের থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেত্রী।

তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তরুণ সমাজের দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এই মহাসমাবেশের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহাসমাবেশের প্রধান অতিথি তিনি।

শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে আসেন। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। এরপর শেখ হাসিনা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।

যুব মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এতে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঞ্চালনা করছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা থেকে অনেক নেতা-কর্মী এসে উপস্থিত হয়েছেন এবং অনেকে এখনো আসছেন। ইতোমধ্যেই নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তার আশপাশের এলাকা। এছাড়াও ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আসেন নেতা-কর্মীরা। বাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলে করে সমাবেশে যোগ দেন তারা।

এসব নেতা-কর্মীর মধ্যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। নিজ নিজ এলাকাভিত্তিক ভাগ হয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে ও তার আশপাশের এলাকায় স্লোগান দিয়ে শোডাউন করেন উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। তাদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে নানা রংয়ের প্ল্যাকার্ড, যুবলীগের সাংগঠনিক ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, গায়ে সম্মেলন উপলক্ষে তৈরি টি-শার্ট।

সমাবেশ ঘিরে উদ্যানকে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়। নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল প্যান্ডেল। এছাড়া, পুরো ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকা দিয়েও সাজানো হয়েছে।

জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া, উদ্যানের বিভিন্ন গেট ও ভেতরে টহল দেয় গোয়েন্দা সংস্থা, আনসার, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ