আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে, উন্নয়ন করেনি।’ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে যুবলীগের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭১’এ যেই জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, বিএনপি সেই জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। আজকে আবার সেই জয় বাংলা ফিরে এসেছে। তারা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল। যেই ভাষণ পরবর্তীতে ইউনেস্কো বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ যুবদের কর্মসংস্থান দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুবদের কর্মসংস্থান দিয়েছি, বিএনপি হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, অনেকে নাকি আমাদের উন্নয়ন চোখে দেখে না। চোখ থাকতে অন্ধ হলে দেখবে কী করে? আমরা কত যুবকের কর্মসংস্থান করেছি। আর জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া? সবই তো একই ইতিহাস। হাজার হাজার যুব নেতাদের হত্যা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগ আমাদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অবস্থান আছে (অংশ নিয়েছে)। যুবক থাকলে কাজ করার অনেক সুবিধা। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে যুবদের সম্পৃক্ত করতে যুবলীগ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তরুণরাই পারে দেশকে গড়ে তুলতে।
যুব মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এতে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঞ্চালনা করছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
এর আগে, শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে পেইন্টিং উপহার দেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। তারপর যুবলীগের উত্তরীয় পরিয়ে দেন যুবলীগের মহিলা নেত্রীরা। পরে সুবর্ণজয়ন্তী লোগো উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যুবলীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ওই সমাবেশ। প্রথমে হয় সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান। এতে যুব মহাসমাবেশের মঞ্চ কাপিয়েছেন শিল্পী মমতাজ এমপি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই যুবলীগের প্রতিষ্ঠা থেকে বর্তমানের ক্রমধারা বর্ণনা ও তার সঙ্গে নৃত্যানুষ্ঠান ছিল অসাধারণ।
এশিয়ার বৃহৎ এ যুব সংগঠনের উৎসবমুখর এই আয়োজনে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ যুবক মিলিত হয়েছেন। যোগ দিয়েছেন হালের সেরা চিত্রনায়কদের অন্যতম রিয়াজ, ফেরদৌস ও চঞ্চল চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ১১ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী। ১৯৭২ সালের এই দিনে দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এ যুব সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রথিতযশা সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত প্রায় পাঁচ দশক ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ