মা বিদিশা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে নিজেকে অবরুদ্ধ দশা থেকে উদ্ধার করতে সহায়তা চেয়েছেন এরশাদপুত্র এরিক এরশাদ।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার মধ্যে পুলিশের সহযোগিতায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসা থেকে বিদিশাকে বের করে দেয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন এরিক। এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদকে ফোন করে মা বিদিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি।
কাজী মামুনুর রশিদ ও এরিক এরশাদের মধ্যেকার কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি নয়া শতাব্দী হাতে রয়েছে।
অডিও রেকর্ডে এরিক এরশাদের মুখে শোনা গেছে, তার মা বিদিশা ওই বাসায় থাকলে সে আত্মহত্যা করবে। আয়শা নামে একটি মেয়ে আছে। তার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক আছে এই অভিযোগ তুলে আয়েশাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে তো আমার শারীরিক সম্পর্ক নেই।
মা বিদিশাকে ‘মীরজাফর’, খুনি এরশাদ শিকদারের সঙ্গে তুলনাও করেন এরিক এরশাদ। এরিক এরশাদ বলেন, ‘আমার বাঁচাটা জরুরি। আজকে তিনি (বিদিশা) যদি এই বাসায় থাকেন তাহলে আমি এই বাসায় থাকব না।’
এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের কাছে সহায়তার আকুতি জানালেও কাজী মামুনের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডিও হয়েছে। এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানসহ সদস্যরা যে কোনো সময় প্রেসিডেন্ট পার্কে গিয়ে হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কা করে এরিক নিজেই সোমবার (৭ নভেম্বর) গুলশান থানায় জিডি করেছে। জিডি নম্বর ৫৪০। তবে জিডির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কাজী মামুনুর রশিদ। জিডিতে বলা হয়, ৬ নভেম্বর এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ ও কাজী রুবায়েত গংরা আমার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় অতর্কিতভাবে চলে আসে। তারা আমার বাসায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে। তারা আমাদের বাসা দখল নিতে চায়। দখল নেওয়ার জন্য আমাদের হুমকিও দিয়েছে।তারা আমাদের বাসায় কোনো নাশকতামূলক দ্রব্য রেখে যেতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ নন। বর্তমানে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার (অব.) তানভীর ইকবাল।
গুলশান থানার ওসি ফরমান আলী বলেন, ওনারা মাঝে মধ্যে এভাবে জিডি করে থাকেন। আমরা সবগুলো তদন্ত করে দেখি। কিন্তু কেউ মামলা করছে না।
এ সম্পর্কে জানতে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামনুর রশিদ বলেন, এরিক এরশাদ এখন তার মায়ের কাছে বন্দি। আমাদের (ট্রাস্টের) সব সদস্যসহ গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এরিককে খোলামেলা কথা বলতে দিলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এরিক আমার কাছে সহায়তা চেয়েছেন। তার মা তাকে মানসিক অত্যাচার করছেন। তার অডিও বার্তা তো আমার কাছে রয়েছে। এই জিডিতে স্বাক্ষর কার তা খতিয়ে দেখা উচিত।’
এরশাদ ট্রাস্টের সদস্য আ্যাডভোকেট রুবায়েত বলেন, এরিক অবরুদ্ধ। এরিকের মা বিদিশা এক মাস আগে এরিকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এরিকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আজ ট্রাস্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অপরদিকে একটি সূত্র বলেছে, এরশাদ ট্রাস্টের টাকা ও সম্পত্তি নিয়ে মূলত কাড়াকাড়ি। কারণ এই ট্রাস্টে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা এফবিআর করা আছে। এ থেকে প্রতিমাসে ৬ লাখ টাকা আয় হয়। এ ছাড়া ট্রাস্টের অধীনে গুলশানে ২ হাজার স্কয়ার বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। এ থেকে মাসে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়। বনানীতে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে এখান থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়। গুলশানে একটি দোকান রয়েছে এখান থেকে মাসে ২ লাখ টাকা আয় হয়। রংপুরে একটি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এই কোল্ডস্টোরেজের সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৩০ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে। এ সব টাকা ট্রাস্টের মাধ্যমে এরিক সুবিধাভোগী।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ