রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন বাজারের পশ্চিম পাশে মুকুল ফৌজ মাঠে এ হামলার শিকার হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। হামলার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন তারা।
বিএনপি নেতাদের দাবি, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিরপুরে তিনটি স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুপুর ১টার দিকে মিরপুর-৬ কাঁচাবাজারের সামনে মঞ্চ তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমতি পাওয়ার পর মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চারদিক থেকে হামলা শুরু করে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে তারা মঞ্চ, পার্কিং করা মোটরসাইকেল ও আশপাশের দোকান ভাঙচুর করে। তাদের অতর্কিত হামলায় সমাবেশে আসা বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন। সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায় তাদের।
এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
হামলার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে আড়াইটার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিরপুর ৬ নম্বর ইনডোর স্টেডিয়ামের সামনে জড়ো হয়ে মিছিল বের করেন। এ সময় তারা প্রধান সড়কের যানবাহনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। মিছিল মিরপুর ১০ নম্বরের কাছে গেলে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
এ সময় ওই সড়কে ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যান চলাচল ও দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। পথচারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটোছুটি করেন।
হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, এ হামলা পরিকল্পিতভাবে করেছে আওয়ামী লীগ। এই মাঠে তো আমাদের সভা করার অনুমতি ছিল। এরপরও ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। পুলিশ আমাদের প্রোটেকশন না দিয়ে নিরব থেকেছে। এ হামলায় আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত ও রক্তাক্ত হয়েছেন। এ হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির সমাবেশের জন্য অস্থায়ী মঞ্চ তৈরিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এ ঘটনায় মিরপুর-৬ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
উল্লেখ্য, এ জনসভা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মিরপুরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। পল্লবীতে ১২ নম্বর 'ডি' ব্লক ঈদগাহ মাঠে জনসভা করার জন্য আবেদন করেছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই।
একই স্থানে ও একই সময়ে বৃহস্পতিবার সভাটির অনুমতি চেয়ে দুপক্ষই মিরপুরের উপপুলিশ কমিশনারের (ডিসি) কাছে চিঠি দেন। তবে আওয়ামী লীগকে ওই মাঠে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে বিএনপিকে ৬ নম্বরের মুকুল ফৌজ মাঠ নির্ধারণ করে দেয় ডিএমপি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ