বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শাহ মোয়াজ্জেমের মৃত্যুতে দলের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী ২০০৯ সালে ইন্তেকাল করেছেন।
বিএনপির এই নেতার জানাজার বিষয়ে দল এবং পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হবে। তার বড় ছেলে বর্তমানে আমেরিকা অবস্থান করছেন।
প্রবীণ রাজনীতিক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার দোগাছি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।
অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৫৪ সালে ঢাকার সেন্টগ্রেগরিজ হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন।
এরপর জগন্নাথ কলেজ থেকে বি এ পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকেই এম এ ও এল এল বি পাস করেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
বহু আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া এই নেতা ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে গরুতর আহতাবস্থায় গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তার ঠিকানা ছিল মূলত কারাগার।ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন তখনকার পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এদেশে অনেক প্রথিতযশা রাজনীতিক তৈরি করেছেন।
১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীণ এই রাজনীতিক। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন তিনি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আশির দশকে শাহ মোয়াজেম হোসেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব, এরশাদ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ উপনেতা ও উপ প্রধানমন্ত্রী হন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সুলেখকও বটে। ‘নিত্য কারাগারে’, ‘বলেছি বলছি বলবো’, ‘ছাব্বিশ সেল’, ‘জেল হত্যা মামলা’সহ তার ডজনখানেক বই প্রকাশ হয়েছে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ