ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেশের মানুষের কাছে নৌকার কোনো বিকল্প নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ২৩ জুন ২০২২, ১৫:৪০ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২২, ১৫:৪২

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাওয়ায় দেশের মানুষের কাছে নৌকা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, তারা (দেশবাসী) জানে নৌকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক এবং নৌকা ছাড়া তাদের গতি নাই। কেননা, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়, বরং অনেক মানুষের ভাগ্য গড়তে এবং জন্মলগ্ন থেকে সেই আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করে যাচ্ছে।

তিনি সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বিষয়ে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, নেতৃত্ব শূন্য কোন দল নির্বাচন করবে আর জনগণ ভোট দেবে কি দেখে। ঐ চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ আত্মস্যাৎকারী অথবা খুন, অস্ত্র চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামী তাদেরকে জনগণ ভোট দেবে দেশ পরিচালনার জন্য? তারাতো তা দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন।

প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে দলের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে দলীয় কার্যালয় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভেনিউ এর মূল অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পদ্মা সেতু করেছি নিজেদের অর্থে অথচ এটা নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তোলে, যাদের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা তারা আবার প্রশ্ন তোলে কোন মুখে? সে প্রশ্নও তিনি উত্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরাতো কিছুই করে যেতে পারেনি। জাতির পিতা তার প্রথম জাপান সফরে যে যমুনা সেতু করার উদ্যোগ নেন সেটা তাকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা জিয়াউর রহমান বন্ধ করে দেন। পরে এরশাদ ক্ষমতায় এসে আবার উদ্যোগ নেন সেতুটি করার। কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেতুর কাজ খুব বেশি এগোতে পারেনি কারণ সবজায়গায় তাদের ছিল কমিশন খাবার অভ্যেস। মায়ের জন্য, দুই ছেলের জন্য, ফালুর জন্য-অমুক-তমুককে ভাগে ভাগে দিতে দিতে সেখানে আর কেউ কাজ করতে পারতো না। ’৯৬ সালে সরকারে এসে আওয়ামী লীগ এই যমুনা সেতুর সঙ্গে রেল লাইন, বিদ্যুত ও গ্যাসের লাইন জুড়ে দিয়ে একে বহুমুখী করেছে।

তার সরকার সে সময় বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শ না শুনে সেখানে যে রেললাইন সংযুক্ত করে পরবর্তীকালে সেটাই সবথেকে লাভজনক প্রতীয়মান হয়। যে কারণে নতুন একটি ডেডিকেটেড রেল সেতু করার জন্য তারা আবারও ফিরে আসে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দানকারি সংগঠন আওয়ামী লীগ এদেশের পল্লী প্রকৃতি এবং মাটি ও মানুষের কল্যাণ যতটা উপলদ্ধি করতে পারে আর কেউ ততটা বুঝবে না। কারণ, তাদের মনে এখনো রয়ে গেছে ‘পেয়ারা পাকিস্তান’। তাছাড়া, জিয়া, খালেদা এমনকি এরশাদ কারো জন্মই বাংলাদেশে নয়। যেমনটি তিনি এবং জাতির পিতা এই মাটিরই সন্তান, বলেন তিনি।

মাটির টানে, নাড়ীর টানেই তারা এদেশের মানুষের ভাগ্য বিনির্মাণে কাজে লেগেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।

আলোচনা সভায় সভাপতি মন্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বক্তৃতা করেন।

আরো বক্তৃতা করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মান্নাফী।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বানভাসী মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ যেমন দাঁড়িয়েছে তেমনি প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তাদের উদ্ধার ও চিকিৎসা প্রদান, খাদ্য প্রদান ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানে সেখানে এতটুকু গাফিলতি নেই।

তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমরা এই বানভাসী মানুষের পাশে আছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেউ যেতে পারছে না সে সব জায়গার খবর পাওয়ার সঙ্গেই তিনি সশস্ত্র বাহিনী মারফত হেলিকপ্টারে করে সেখানে সাহায্য পাঠাচ্ছেন, উদ্ধার তৎপরতা চালানো বা খাদ্য পৌঁছানো হয়েছে। অথচ যারা আজ পর্যন্ত বন্যায় বানভাসী মানুষকে এক মুঠো খাবারও দিতে পারেনি, তাদের পাশে দাঁড়ায়নি, ঘরে বসে তারা কেবল মায়া কান্না করছে, এটাই তাদের চরিত্র।

মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম আওয়ামী লীগ করা হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুইটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। প্রতিষ্ঠার সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক ছিলেন। তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ