বিদেশে অর্থ পাচারকারী এবং তাদের মদদদাতাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (১৫ মে) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।

বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিএনপি এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং তাদের বৌদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন- এরকম কতজন পি কে হালদার আছে? আমরা খুব পরিষ্কার করে জানতে চাই যে, কত হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে পাচার হয়েছে? কারা তার ( পি কে হালদার) সঙ্গে জড়িত ছিল, কারা মদদ দিয়েছে— সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

‘দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব- এই যে দুর্নীতি হচ্ছে, চুরি হচ্ছে, ডাকাতি করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে, তা তদন্তের মাধ্যমে বের করে জনসমক্ষে প্রকাশ করা’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সুযোগ পেলেই বিএনপির লোকদের হয়রানি করা আর কিছু চুনো-পুঁটি ধরা। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত করে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত বড় বড় দুর্নীতিবাজকে সামনে আনতে হবে, আইনের আওতায় আনতে হবে।‘

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা ‍বিদেশে পাচারকারী পি কে হালদারকে পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা ভালো কথা। তাকে ধরা হয়েছে ভারতে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই বলেছেন- হাজার হাজার কোটি টাকা যারা পাচার করেছে তাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না। তার মানে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে হলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে।’

‘আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে এক জোট হয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা সংসদ এবং সরকার গঠন করি। এই বড় কাজটা করার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন এই পবিত্র দিনে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। এরপর কমলাপুর আন্তর্জাতিক ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারের এস শাসনবংশ মহাথের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রার্থনা করেন এবং মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের সুনন্দ মিত্র থের বক্তব্য দেন।

বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও জিয়া পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, জন গোমেজ, অমলেন্দু দাস অপু, আবদুল বারী ড্যানী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তরফ থেকে মনীষ দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া, উদয় কুসুম বড়ুয়া, প্রবীন চন্দ্র চাকমা, চন্দ্র গুপ্ত বড়ুয়া, সনত তালুকদার, রনজিত বড়ুয়া, অনিমেষ চাকমা রিংকু, জয়ন্ত বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, পারদর্শী বড়ুয়া প্রমুখ।

নয়া শতাব্দী/এসএম