সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তিনবার এতিম-ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে ইফতার আয়োজন করে আসছে দলটি। এতিম আলেমদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে শামিল হন বেগম জিয়া। সেই হিসেবে এবারো দলটি প্রথম রোজায় ইফতারের আয়োজন করে। আগের দুইবার ইফতার আয়োজনে মঞ্চে দলের চেয়ারপারসনের সম্মানে একটি চেয়ার খালি রাখেন দলটির নেতারা। তবে এবার খালেদা জিয়া বাড়িতে অবস্থান করলেও তার সম্মানে কোনো চেয়ার ‘ফাঁকা’ রাখা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, খালেদা জিয়াকে কী তবে ভুলতে শুরু করেছে বিএনপি? নাকি রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছেন বেগম জিয়া?
জানতে চাইলে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থাকা স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, এটি নিয়ে জল ঘোলা করার কিছু নেই। চেয়ার রাখা না রাখা বিষয় না, তিনি আমাদের অন্তরেই আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা পাওয়া সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী শর্তসাপেক্ষে পঞ্চম দফায় সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত এখন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি কারাগারের বাইরে থাকবেন। বর্তমানে গুলশানের বাসা ফিরোজায় একান্ত জীবনযাপন করছেন। নানা রোগ-শোকে আক্রান্ত ৭৭ বছর বয়সি বিএনপি চেয়ারপারসন বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত দুই বছর ধরে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ইফতার মাহফিল আয়োজন থেকে বিরত থাকে বিএনপি। তবে এবার করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় বিএনপির প্রথম ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় গত রোববার। রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে ওলামা-মাশায়েখ- এতিমদের সম্মানে বিএনপি ওই ইফতার মাহফিল আয়োজন করে। সেখানে খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি, সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদেও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ইফতারের সময় মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবছর আমরা ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইফতার করেছি। দুর্ভাগ্য তিনি আজকে অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৮ হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছেন। রমজানে আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেন, তিনি যেন সুস্থ করে দেন এবং আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেন।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যামের কারণে নিজের গাড়ি রাস্তায় রেখে হেঁটে ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়েছি।
রাজধানীর ট্রাফিকব্যবস্থার ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইফতার অনুষ্ঠানে অনেক মেহমান আসতে পারেননি, আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছেলে-মেয়েরা আসতে পারেননি। কারণ ট্রাফিক জ্যাম। এত ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম যে, কেউ কেউ এসে পৌঁছাতেই পারেননি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ