ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শুরুতেই হোঁচট ইসির সংলাপ

সাড়া দেননি দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষাবিদ
প্রকাশনার সময়: ১৪ মার্চ ২০২২, ০৯:০৬

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের শুরুতেই হোঁচট খেল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপের প্রথম দিনে সাড়া দেননি আমন্ত্রিত দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষাবিদ। গতকাল রোববার বিকাল ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে ৩০ জন আমন্ত্রিত শিক্ষাবিদদের মধ্যে অংশ নেন মাত্র ১৩ জন।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা অধিক অংশগ্রহণমূলক সংসদ নির্বাচন চাই। এজন্য শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে আরও ঋদ্ধ হব। তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমাদের সংলাপের উদ্দেশ্য ব্যক্ত করা হয়েছে। এই কমিশন নবগঠিত কমিশন। কমিশনের কাজ হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচন সম্পন্ন করা। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলেছেন। আগের নির্বাচন পুরো অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন কারণে হয়নি। সেজন্য আমরা চাই নির্বাচনটা (দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন) যাতে আরও অধিক অংশগ্রহণমূলক হয়।

তিনি আরও বলেন, সংলাপের মাধ্যমে প্রকৃত জনগণের মতামত উঠে আসবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে কী কী করণীয় হতে পারে, আপনাদের (শিক্ষাবিদ) মতামত নিয়ে আমরা অনেক কিছু আহরণ করতে পারব, আরও ঋদ্ধ হব। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ইসি পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপ করবে। এরপর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবে ইসি। সংলাপ শেষে নির্বাচন কমিশন তার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করবে। নতুন নির্বাচন কমিশন যতই ভালো কাজ করুক না কেন, তাদের গালি খেতেই হবে বলে মনে করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বিষয়টি নিয়ে না ভেবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা যত ভালো কাজই করেন না কেন, গালি আপনাকে খেতেই হবে। গালি নিয়ে ভাববেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যেন বলতে পারেন, আমি কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম সম্পর্কে বলা হচ্ছে এটা নাকি অনেক হাই লেভেলের টেকনোলজি। আসলে তা না। এটা খুবই লো লেভেলের টেকনোলজি। এখন তো অনেক হাইটেক জিনিসপত্র আছে। আমাদের ভার্সিটির স্টুডেন্টরা ইভিএম নিয়ে প্রজেক্ট করে।

নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হিসেবে দেখতে চান না বলে তিনি বলেন, আমি নিরপেক্ষতাকে ভয় পাই। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন এমন নির্বাচন হবে যেখানে জয়ী দল এবং হারা দল- দুটোই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হবে।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে ভাবারও পরামর্শ দিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকে। তারাও দেশ নিয়ে ভাবে। তারা কীভাবে ভোট দিতে পারে সেটা দেখতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে জটিলতার সমাধানের পরামর্শও দেন এই শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, ইদানীং দেখা যাচ্ছে অনেক জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল হচ্ছে। এর জন্য অনেকে অনেক টাকা খরচ করেও সমাধান পাচ্ছে না। কমিশন এটা দেখলে ও সমস্যার সমাধান করলে একটা পজিটিভ ইমপ্রেশন পড়বে।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনরারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত প্রথম সংলাপে সাড়া দেন ১৩ জন। তারা হলেন- ড. জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, সাদেকা হালিম, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, ড. আখতার হোসেন, লায়লুফার ইয়াসমিন, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. নিয়াজ আহম্মেদ খান।

অনুপস্থিত শিক্ষাবিদরা হলেন- প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. আখতারুজ্জামান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আতিকুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. ফেরদৌস হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাব্বত খান, অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামছুল আলম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ড. তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ