ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জনগণ আ.লীগের ফাঁদে আর পা দেবে না : ফখরুল

প্রকাশনার সময়: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:০০

জনগণ আওয়ামী লীগের ‘ফাঁদে’ আর পা দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ের রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বছরব্যাপী আয়োজনে ১২ স্তরে ১২টি বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় ৪১৯ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। তাদের মধ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে ১৭জন এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ৭৯ জন বিজয়ী হন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খুব কথা বলতে শুরু করেছে— আমরা সার্চ কমিটিতে নাম দেইনি কেন? এটা তো জনগণের সঙ্গে চরম প্রতারণা। আমরা বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখেছি একইভাবে তাদের লোকজনকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন তৈরি করে। আমি অত্যন্ত পরিষ্কার করে বলতে চাই— দেশের জনগণ আর সেই ফাঁদে পা দেবে না। তারা রুখে দাঁড়াবে, অবশ্যই উঠে দাঁড়াবে।’

‘এই ভয়াবহ গণতন্ত্রবিরোধী, বাংলাদেশের মানুষবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে রুখে দেওয়ার জন্য তারা (জনগণ) জাতীয় ঐক্য তৈরি করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, ’বলেন মির্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার লুটপাটের অর্থনীতি চালু করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এরা সারাক্ষণ চিৎকার করছে উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন। মনে হয় যে গোটা বাংলাদেশকে তারা সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক সংস্থা হেরিটেজ ফাউন্ডেশন এক জরিপে বলেছে— এখন ১৭৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭তম। ২০২১ সালে ছিল ১২০তম। অর্থাৎ ১৭ ধাপ নিচে নেমে গেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই যে সূচক নিচে নামছে, এটি ক্রমান্বয়ে নামছে। কারণ, সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। এখানে এক ধরনের লুটপাটের অর্থনীতি চালু করেছে, ডাকাতির অর্থনীতি চালু করেছে। দুর্নীতি করাটা তাদের মজ্জাগত। এটাকে তারা অপরাধ মনে করে না। এটাকে তারা রাইট (অধিকার) মনে করে। লুটপাটই হচ্ছে তাদের কাছে উন্নয়ন। এখানে তাদের (আওয়ামী সরকার) উন্নয়ন হয়েছে, তারা কোটিপতি হয়েছে, তারা বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করছে।’

তিনি বলেন, ‘যাদের ব্যবহার করে তারা ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে, তাদের সঙ্গে শেয়ার করছে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, আমরা খুশি হব। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের আয় তো বাড়াতে হবে। সেই সুযোগটা তৈরি করতে হবে। সেটি কিন্তু হচ্ছে না।’

মূল্যস্ফীতি বেড়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ইনফ্লেশন ২০০% পর্যন্ত বেড়েছে। আজকে চাল-ডাল-তেল-লবণের দাম যে হারে বেড়েছে, কোনো স্বাধীন দেশে এভাবে চলতে পারে না। এটা তো পুরোপুরিভাবে ভেনেজুয়েলা বা নাইজেরিয়ার মতো অবস্থা হয়ে যাচ্ছে। অপচয়, অপব্যবহার, দুর্নীতির কারণে দেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে (ফেইল্ড স্টেটে) পরিণত হয়েছে।’

বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। আমরা এখন থেকে পুরো মার্চ মাসব্যাপী আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করব। এইসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতার সঠিক ও প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরব।’

রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা সুর্বণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এ বি এম আবদুস সাত্তার, রিয়াজউদ্দিন নসু ও শায়রুল কবির খান।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ