সরকারের ঘোষিত ‘লকডাউন’ শিথিলের সিদ্ধান্তে করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তার ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। শুক্রবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এ শঙ্কা প্রকাশ করেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সস্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাখাওয়াত হাসান জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, মোশতাক আহমেদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ প্রমুখ।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ঈদ উপলক্ষে সরকার ‘লকডাউন’ উঠিয়ে দিল এবং মানুষকে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এটা পরিকল্পনাবিহীন উদ্যোগ। এবার করোনার বিস্তার ঢাকা
না, গ্রামে। এই ঈদে সবাই বাড়ি যাবে আবার গ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরত আসবে, তখন করোনা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবাই জানে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট খুবই দ্রুত ছড়ায়। ফলে, করোনাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাতে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত না হয় এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত বিএনপি।
তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ ওষুধ ও অক্সিজেন পাচ্ছে না। জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে শয্যা না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়ছে। ফলে সারাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা একেবারে হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে রয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের পক্ষ থেকে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হবে। প্রতিটি জেলায় দলের কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহযোগিতায় সব মিলিয়ে ৫৩টি জেলায় করোনা হেলপ সেন্টার চালু রয়েছে। আশা করি, ঈদের আগেই বাকি জেলাগুলোতে সেন্টার খুলতে পারব। দেশের বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের পাশে থাকব।
হেলপ সেন্টার বন্ধের অভিযোগ করে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, গত ১৪ জুলাই বরগুনা হেলপ সেন্টার চালু করেছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পুলিশ সেই সেন্টারটি বন্ধ করে দিয়েছে। জেলার হেলপ সেন্টারগুলো থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন সিলিন্ডার বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থাও থাকবে। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে জনগণ স্বাস্থ্য-চিকিৎসা সেবা, ওষুধসহ বিভিন্ন সেবা পাবেন।
সরকারের প্রণোদনা কোথায় যায় প্রশ্ন করে তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন’ সফল করতে হলে দরিদ্র, প্রান্তিক, কর্মহীন, দিন আনে দিন খায় মানুষের কাছে কমপক্ষে তিন মাস ১৫ হাজার টাকা পৌঁছে দিতে হবে। সেটা সরকার করেনি। তারা প্রণোদনা ঘোষণা করেন। প্রণোদনার টাকা কোথায় দেয়, কেউ জানি না। বস্তিগুলোতে গিয়ে যদি জিজ্ঞাসা করেন প্রণোদনার টাকা তারা পায় কিনা আমার মনে হয়, আপনারা সঠিক উত্তরটা পেয়ে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, চাঁদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে করোনা হেলপ সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসইউ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ