কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি চেয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বুধবার কওমি মাদরাসা ভিত্তিক দলটির মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেন।
বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বৈঠকে আলেম-ওলামা ও নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য দাবি জানানো হয় বলে রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে হেফাজত ইসলাম।
গেল বছর ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটে; যেগুলোতে হেফাজতের নেতাদের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দেশব্যাপী এসব সংসহিতায় হতাহতের পাশাপাশি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এরপর এসব মামলায় হেফাজতের শীর্ষ নেতা মামুনুলসহ দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাতে। ওই মামলাগুলোর তদন্ত করছে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই।
বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে গ্রেপ্তার এসব নেতাকর্মীদেরই মুক্তি চেয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত যেসব বন্দির মুক্তি হয়েছে, তাদের মুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অনান্যদের শুকরিয়া আদায় করা হয়।
একই সঙ্গে এখনও যেসব ওলামায়ে কেরাম, হেফাজতের নেতা-কর্মী ও ইসলাম প্রিয় জনতা বন্দি রয়েছেন, তাদের সবার দ্রুত মুক্তি দানের আহবান জানানো হয়।
এতে বলা হয়, হেফাজত নেতা কর্মীদের বন্দি হওয়ার সময়কাল ১০ মাসেরও বেশি হয়ে গেছে। একেকজন বন্দির কারণে একেকটি পরিবার, কোনো ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠান সমস্যাগ্রস্ত অবস্থায় আছে।
কেউ একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়।
এছাড়া বৈঠক থেকে হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে ২০১৩, ২০১৬ ও ২০২১ সালের সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেফাজত নেতাদের বক্তব্য শোনেন এবং ওলামায়ে কেরামের মুক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারাবন্দীদের সঙ্গে পরিবারের লোকজনের সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, নায়েবে আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইয়াহিয়া, নায়েবে আমির দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস নদভী ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দীন রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ