বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তি চাই, সুচিকিৎসা চাই। বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার দাবি জানাই। আর যদি সুচিকিৎসা না করা হয়, তার যদি কোন কিছু ঘটে তবে তার সব দায়দায়িত্ব এই সরকারকে বহন করতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানুষ যে স্বপ্ন দেখিছিলো, আশা-আকাঙ্খা ছিলো, আজ এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ধুলিস্মাত করে দিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বুকের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। এই সরকার বাংলাদেশের সব সুন্দর জিনিসকে ধ্বংস করেছে, সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে। আমাদের গণতন্তকে ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে ধ্বংস করেছে, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করেছে। অর্থনীতিকে লুটপাটের অর্থনীতিতে চালু করেছে। আজকে দেশকে কি করেছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, এ দেশে গুম হয়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ইলিয়াস আলী এমপির মতো অনেক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছে। তারা এদেশে আসতে চেয়েছে, তাদেরকে আসতে দেয়া হয়নি। এই সরকার জনগণকে ভয় পায়। এই সরকার জনবিহীন গনতন্ত্রের বাইরে অবস্থান নিয়েছে। যারা গণতন্তকে ধ্বংস করে দিয়েছে তাদেরকে দেশের মানুষ ক্ষমতায় রাখতে চায় না। জনগণের ঐক্য তৈরি করে জনগণকে সাথে নিয়ে ১৯৭১ ও ১৯৯০ সালের মতো এই দানব সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। এরা নির্বাচন করতে ভয় পায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, আজ রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সংলাপের জন্য ডাকাডাকি শুরু করেছে। আমরা আলাপ করে, সংলাপ করে আরেকটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোন ভোট হয় নাই, কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় নাই। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোট দখল করেছে, ডাকাতি করেছে, পরেরদিন আর ভোট দিতে পারেনি জনগণ। তখনও আলোচনা করে একটি সংলাপ করেছিল। এখনও আবার সেই আলোচনা শুরু। এই সংলাপ অর্থহীন, এই সংলাপে এই সংকটের সমাধান হবে না, গণতন্ত্রের সমস্যার সমাধান হবে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মইনুল ইসলাম খান শান্ত, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবীর।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ