ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) ৯৮ সালের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. বিজয় কুমার পাল বলেছেন, ২৯ তম ব্যাচে একমাত্র আমি প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ করেছি। এরপরের ব্যাচেও কোনো ছাত্রলীগের দেখা মেলেনি। ৩১তম ব্যাচের অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কিন্তু ৯৪ সালে মমেকের ৩০তম ব্যাচের কোনো মুখই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।
এমন তথ্যই দিয়েছেন ডা. বিজয় কুমার পাল। আর এই কমিটির সভাপতি ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব সরকার বাদল। আর বাদল-বিজয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বর্তমান সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। পরবর্তীতে ২০০০ সালে ডা. মুরাদ হয়েছেন মমেক ছাত্রলীগের সভাপতি।
তবে তৎকালীন ছাত্রলীগের একাধিক নেতৃস্থানীয়রা জানান, মুরাদ হাসান বিএনপির শাসনামলে (১৯৯৪) মমেকে ভর্তি হয়েছেন। মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদকের পদও বাগিয়েছেন। অনেকটা আয়েশি ভঙ্গীমাতেই বিএনপির শাসনামল ভোগ করেছেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সুধা পান করে ছেড়েছেন মমেক।
জানা যায়, বাদল-বিজয় কমিটিতে ডা. মুরাদকে পদ দিতে চাননি ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি মির্জা খালিদ আল আব্বাসও চাননি মুরাদ ছাত্রলীগের কমিটিতে আসুক। অপরদিকে অন্য একটি গ্রুপ মুরাদকে ছাত্রলীগের কমিটিতে অনুপ্রবেশ করানোর জন্য জোর ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ডা. মুরাদের পিতা ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। উনি বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। মুরাদকে পদে আনতে চারদিক থেকে আমাদের চাপ ছিল। অনেকটা বাধ্য হয়ে আমরা তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছি।
ডা. মুরাদের এক ব্যাচ সিনিয়র ও ৯৮’র মমেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইসহাক অনেকটা আক্ষেপের সুরেই জানান, বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান আদর্শচ্যুত হয়ে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়েছেন তার পিতার জোরে। মুরাদ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক থাকা অবস্থাতেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। অর্থাৎ বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী।
তিনি আরও জানান, মুরাদ হাসান ৯৫ সালে মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক হয়েছেন। এর এক বছর পর আমরা মেডিকেল কলেজ ছাড়তে বাধ্য হলেও তিনি এক পদ থেকে আরেক পদে চলে যান। পার্থক্য শুধু দল আর আদর্শের।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ