বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। এ রোগের চিকিৎসার জন্য এ মুহূর্তে যে প্রযুক্তি দরকার তা ভারতীয় উপমহাদেশে নেই বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. এফ এম সিদ্দিকী। এসমস্ত চিকিৎসা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে সম্ভব বলে জানান তিনি।
এ পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা স্বভাবতই উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন। তবে, দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলনে পরিবারের কাউকেই কখনো দেখা যায় না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘খালেদা জিয়ার এই ক্লান্তিলগ্নে পরিবারের সবাই উৎকণ্ঠায় আছেন। সবাই যার যার অবস্থান থেকে তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছেন।’
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে একমাত্র খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারকেই দেখা গেছে, সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও তার চিকিৎসা ও অন্যান্য কাজে সহযোগিতা করতে। তিনি খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
খালেদা জিয়ার বড় বোন সেলিমা ইসলামও তার পাশে রয়েছেন বলে জানান দিদার। তিনি বলেন, সেলিমা ইসলাম সবসময় খালেদা জিয়ার খোঁজখবর রাখছেন।
ইতোমধ্যে সেলিমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। বুঝতেই পারছেন তিনি ২৬ দিন হাসপাতালে থেকে এসেছেন। আবার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই হাসপাতালে যেতে হলো। তার হিমোগ্লোবিন অনেক কমে গেছে। শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কারণ এখানে ডাক্তাররা সেভাবে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। কারণ তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি বা সুবিধা নেই।’
পরিবারের অন্যতম সদস্য তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমান লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার খোঁজ খবর রাখছেন। আইনি জটিলতায় অসুস্থ মাকে দেখতে তারেক রহমান দেশে না এলেও তার স্ত্রী ও কন্যার আসতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। কারণ, তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল টিমের প্রধান হিসেবে লন্ডন থেকে চিকিৎসার ব্যাপারে মনিটরিং করছেন।
সে হিসেবে অসুস্থ খালেদা জিয়ার সেবা করতে তিনি যদি দেশে আসতে চান, সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। এই ব্যাপারেও ব্রিটিশ মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘তারেকের পরিবার অবশ্যই আসতে পারে, সেখানে কোনো বাধা থাকবে না। তবে এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য জোবায়দা রহমান ও জায়মা রহমান আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, এমন খবর পাওয়া যায়নি।’
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিয়মিত দেখভাল করছেন তার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর দেশে আসেন তিনি। এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর সিঁথি দেশে এসেছিলেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ