বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদকে সংসদে দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ নামের একটি সংগঠন। শনিবার (২৭ নভেম্বর) রাত ৯ টার সময় গণমাধ্যমকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এমন হুশিয়ারি দেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রো পাকিস্তানি রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলাকে কেন্দ্র করে একটা বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। মনে রাখতে হবে, পাকিস্তানিরা কিন্তু আমাদের দেশে মেহমান, অতিথি।’ পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত রাজনৈতিক দল বিএনপি'র একজন সংসদ সদস্য পাকিস্তানের স্বার্থের পক্ষে কথা বলবেন এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু মহান জাতীয় সংসদে মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর উদযাপন লগ্নে পাকিস্তানের পক্ষে নগ্নভাবে কথা বলার তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি আরও জানায়, বাংলাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে বিদেশি পতাকা উড়ানোর নিয়ম রয়েছে। জাতীয় পতাকা বিধিমালা ২০২১ (সংশোধিত) তে বিদেশি পতাকা উড়ানো সম্পর্কে ৯(৩) বিধিতে বলা আছে, বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশন তাদের জাতীয় দিবস উপলক্ষে যে স্থানে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে, সেখানে তাদের জাতীয় পতাকা ওড়াতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশের পতাকা ‘সম্মানজনক স্থানে পাশাপাশি উত্তোলন’ করতে হবে। গত ১৫ নভেম্বর পাকিস্তান টিম মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তাদের জাতীয় পতাকা টানিয়ে অনুশীলন করে। অর্থাৎ এই উত্তোলন বাংলাদেশের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন কারণ ওখানে বাংলাদেশের পতাকা পাশাপাশি টানানো হয়নি। তাছাড়া অনুশীলনে পাকিস্তানি পতাকা উড়ানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশের একজন আইনপ্রণেতা পতাকা বিধি না জেনেই পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এর সাথে একমত হয়ে আমরাও বলতে চাই, বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশিদ যেভাবে পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে সংসদে কথা বললেন, এতে তাদের প্রকৃত চরিত্র বেরিয়ে এসেছে। তারা যে রাজাকার, আলবদর, আলশামসের পক্ষে কথা বলছেন ও রাজনীতি করছেন, তারা যে দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না, সেটা প্রমাণিত হয়েছে।
হুশিয়ারি দিয়ে সংগঠনটি জানান, জাতির জনককে হত্যার পর জিয়াউর রহমান হত্যাকারীদের শুধু লালন–পালনই করেননি, পাকিস্তানি ধারা বাংলাদেশে প্রবর্তন করার জন্য সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চরিত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। একই ধারায় তারা এখনো রাজনীতি করে যাচ্ছেন। এর প্রমাণ আজ হারুনুর রশিদ সংসদে উপস্থাপন করলেন। তাই পাকিস্তানি এজেন্ট হারুনকে বাঙালি জাতির মহান সংসদে দাঁড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় ‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ