সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিন দিন স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে রক্তের হিমোগ্লোবিন। এটি জটিল রোগের ইঙ্গিত। তার লিভার, কিডনি ও হার্টের জটিলতা বেশি। শারীরিক প্যারামিটারগুলো আপ-ডাউন করছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন তিন বারের এই প্রধানমন্ত্রী।
তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সিসিইউতে প্রতিনিয়ত বাচাঁর জন্য মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। সব মিলিয়ে অনেকটা জীবন শঙ্কা নিয়ে দিন পার করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এমতবস্থায় তাকে নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় আছেন চিকিৎসকরা ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন। তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন রকম অসুখে। এই অসুখ এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে, তাকে বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। ডাক্তাররাই বলছেন, তাকে বিদেশে পাঠালে তিনি সুস্থ হবেন।
তিনি বলেন, এভারকেয়ার সবচেয়ে ভালো হাসপাতাল। এখানে যে ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে এই অসুখ সারিয়ে তুলতে তা যথেষ্ট নয়। এখন নেত্রীর বিদেশে চিকিৎসাটা সবচেয়ে জরুরি। একথা বারবার বলা হচ্ছে। এরপরও আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের নেত্রী তা গ্রহণ করছেন না। আবারও আমরা বলছি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন তার জীবন রক্ষার্থে। এর সঙ্গে রাজনীতিকে নিয়ে আসবেন না।
তিনি আরও বলেন, ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার যেকোনো দণ্ডিত ব্যক্তিকে শর্তযুক্ত করে বা শর্ত ছাড়া মুক্তি দিতে পারে। সরকার খালেদা জিয়াকে শর্তযুক্ত করে মুক্তি দিয়েছে। সরকার চাইলে যেকোনো শর্ত যুক্ত করতে পারে। অর্থাৎ এটি সম্পুর্ণভাবে সরকারের এখতিয়ার। বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতির বিষয়টি এখন সরকারের ওপর নির্ভর করছে।
দলটির মধ্যম সারির একাধিক নেতা বলেন, চিন্তামুক্ত থাকতে পারছি না। কারণ ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ কারাবাসে তিনি প্রয়োজনীয় উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমাদের দাবিকে উপেক্ষা করে সরকার তাকে বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ না দিয়ে এখনো চরম অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তার বয়স এবং শারীরিক নানা জটিল অবস্থার খবরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
তারা আরও বলেন, ম্যাডামের প্রকৃত শারীরিক অবস্থা জানতে পারছি না। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ধোঁয়াশার মতো। আমাদের আশঙ্কা ম্যাডাম কি সুস্থ হয়ে আবার রাজনীতিতে ফিরতে পারবে?
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য প্রায় প্রতিদিনই বৈঠকে বসছে মেডিকেল বোর্ড। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ‘মাল্টিফাংশনাল’ রোগ থাকায় হাসপাতাল হিসেবে এভারকেয়ারের সেবা ব্যবস্থাও অনেকটাই সীমিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা চিকিৎসকরা ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ