রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার একটা রায় হয়েছে। রেইনট্রি হোটেলে দুইজন শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছিল। মামলা ও পত্রিকা থেকে যা জেনেছি, ঘটনা ঘটেছে স্বীকার করা হচ্ছে, আদালতেও স্বীকার করছে। কিন্তু রায় বেকসুর খালাস। কারণ, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদেরকে একুইজড করা হয়েছে তারা খুব ক্ষমতাধর। তাদের এত টাকা! তাদের আছে জুয়েলারি ব্যবসা, এমপি (সংসদ সদস্য) এই সমস্ত। এর ফলে আজকে সমস্ত নারী জাতিকে অপমান করে এদেরকে খালাস দেয়া হয়েছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হতাশ হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি। এই ধরনের রায় আমরা মেনে নিতে পারি না।’
বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণের শিকার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন ‘দেশের বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে। এসকে সিনহাকে (সাবেক প্রধান বিচারপতি) বন্দুক দেখিয়ে দেশ থেকে বের করে দিলেন কী কারণে? উনি একটা রায় দিয়েছিলেন বিচারক নিয়োগ করার যে ব্যবস্থা ছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, বিচারকদের অভিসংশনের ব্যাপারে। সেটা সরকার মেনে নিতে পারেনি। তারপর তাকে একেবারে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ থেকে বের করে দেয়া হলো। আমরা তো দেখেছি এগুলো, নামও জানি আমরা। তার মধ্যে একজন চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে, ল‘ সেক্রেটারিও ছিলেন সেটার মধ্যে।’
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সহিংসতার জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে চারিদিকে তাকিয়ে দেখুন, কী করেছেন তারা। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন- বড় বড় রাম-দা, ছুরি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। চিন্তা করা যায়। আবার মন্ত্রীরা বলছেন, না না এটা তেমন কিছু না, একটু সাধারণ ঝগড়া-ঝাটি। এ সব কিছুর মূলে এই সরকার ও শেখ হাসিনা। তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে, পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছে, সমস্ত সুস্থ চিন্তা-ভাবনা, মুক্তচিন্তা-এগুলোকে নির্বাসিত করেছে এবং রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে। উদ্দেশ্য একটাই-এখানে কেউ রাজনীতি করবে না। তারা ক্ষমতা দখল করে বসে থাকবে। নির্বাচন কমিশন বলছে- সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয়েছে। ভদ্রলোকের (সিইসি) লজ্জা-শরম বলতে কিছু নেই।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসান চরে একটা রাজকীয় অবস্থান তৈরি করে দিয়েছে। কেন? আপনাদের উদ্দেশ্য অন্যরকম। আপনারা এদেশে এটাকে একটা স্থায়ী ইস্যু হিসেবে আপনারা নিজেরা এখান থেকে ফায়দা লুটতে চান।’
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাতের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, লেবারপার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ইসলামিক পার্টি আবুল কাশেম প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ